কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি সই
যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন চুক্তি: খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার ও পুনর্গঠন তহবিল প্রতিষ্ঠা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনা ও দর–কষাকষির পর অবশেষে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যা ইউক্রেনের দুর্লভ খনিজ সম্পদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার এবং যুদ্ধপরবর্তী পুনর্গঠনে অর্থায়নের একটি কাঠামো নির্ধারণ করে।
চুক্তির মূল বিষয়বস্তু
✅ ‘যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল’ গঠন
- তহবিলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ও সরাসরি অর্থ সহায়তা প্রদান করবে।
- ইউক্রেন সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের ৫০% তহবিলে জমা দেবে।
- প্রথম ১০ বছর তহবিলের সম্পূর্ণ অর্থ ইউক্রেনেই বিনিয়োগ হবে। পরবর্তীতে লাভ অংশীদারদের মধ্যে ভাগ হবে।
✅ সিদ্ধান্ত গ্রহণে উভয় পক্ষের সমান অধিকার
- দুই দেশের প্রতিনিধিরাই সমানভাবে তহবিল ব্যবস্থাপনায় অংশ নেবেন।
✅ রাশিয়াপন্থী কোনো পক্ষ লাভবান হতে পারবে না
- মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ঘোষণা দেন: “রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় সহায়তাকারী কেউ এই তহবিল থেকে কোনোভাবেই লাভবান হতে পারবে না।”
চুক্তির পটভূমি ও কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট
দুই দেশের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য
🔹 স্কট বেসেন্ট, মার্কিন অর্থমন্ত্রী:
“এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি কৌশলগত ভাবনা, যা ইউক্রেনকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার প্রকাশ করে।”
🔹 ইউলিয়া সিরিদেনকো, ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী:
“আমরা শুধু বিনিয়োগই পাচ্ছি না, বরং এমন একজন কৌশলগত অংশীদার পাচ্ছি, যিনি আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে সহায়তা করবেন।”
🔹 ডেনিস শ্মাইগাল, ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী:
“এই চুক্তি ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ সম্পদ ও অবকাঠামোর ওপর আমাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রচেষ্টার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক নয়।”
চুক্তিটি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, বরং কৌশলগতভাবে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও পশ্চিমা জোটের সঙ্গে অংশীদারিত্ব সুদৃঢ় করার দিকেও ইঙ্গিত করে। এটি রাশিয়াকে একটি কৌশলগত বার্তা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ পুনর্গঠন ও খনিজ সম্পদের ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার একটি চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
