July 16, 2025
টানা তিন দিনের ছুটিতে রাজধানীতে ৩ বড় সমাবেশ

টানা তিন দিনের ছুটিতে রাজধানীতে ৩ বড় সমাবেশ

এপ্রি ৩০, ২০২৫

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে টানা তিন দিনের সরকারি ছুটি। এই ছুটিকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা একাধিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে যাচ্ছে। নয়াপল্টন, বায়তুল মোকাররম এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান—তিনটি ভিন্ন স্থানে তিনটি প্রভাবশালী দল ও সংগঠন তাদের বৃহৎ জনসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এতে করে নগরজীবনে ভোগান্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক উত্তেজনার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

১ মে: বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ১ মে, বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সমাবেশের মূল আয়োজক জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। এতে অংশ নেবেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (ভার্চ্যুয়ালি), মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

এই সমাবেশ কেবল শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং দলীয় পুনঃসংগঠনের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। আশপাশের জেলা থেকে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে এটি বড় জনসমাগমে রূপ নিতে পারে, যা ঢাকার যান চলাচল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চাপ সৃষ্টি করবে।

২ মে: এনসিপির রাজনৈতিক দাবি ও সমাবেশ

শুক্রবার (২ মে) বিকেল ৩টায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ ফটকে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। এ সমাবেশে আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনৈতিক নিষিদ্ধকরণের দাবি জানানো হবে।

এনসিপির এ কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত ও উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে। প্রশাসনের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে শুক্রবারের নামাজ শেষে এলাকায় স্বাভাবিকভাবেই জনসমাগম বেড়ে যায়। জননিরাপত্তা রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়।

৩ মে: হেফাজতের মহাসমাবেশ

ছুটির তৃতীয় দিন, শনিবার (৩ মে), হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে। এক মাসের প্রস্তুতির পর এই কর্মসূচি আয়োজিত হচ্ছে। সংগঠনটির দাবি সমূহের মধ্যে রয়েছে: নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, ২০১৩ ও ২০২১ সালের ঘটনার বিচার, সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা’ পুনঃস্থাপন এবং আন্তর্জাতিক মুসলিম নিপীড়নের প্রতিবাদ।

হেফাজতের সমাবেশ ধর্মীয় আবেগ ও রাজনৈতিক দাবির সংমিশ্রণে গঠিত, যা সাম্প্রতিক অতীতে সহিংসতার উদাহরণ তৈরি করেছে। অতএব, এটি প্রশাসনের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের দাবিদার।

এই তিন দিনের ছুটিতে রাজধানীতে একাধিক বড় জনসমাগম, রাজনৈতিক-ধর্মীয় বক্তব্য এবং সমাবেশের ফলে নগরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সঙ্কটাপন্ন হতে পারে। সরকারি ছুটি হওয়ায় সাধারণত মানুষ ঘরের বাইরে সময় কাটাতে আগ্রহী থাকেন, ফলে সাধারণ নাগরিকদের চলাফেরায় বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসনকে উচিত হবে প্রতিটি কর্মসূচির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ, শক্তিশালী এবং কৌশলী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এই তিন দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি কেবল দলীয় আদর্শ বা দাবির বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে দেশের রাজনৈতিক গতিপথে প্রভাব ফেলতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন, দলসমূহ ও নাগরিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি।

Leave a Reply