
উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগে খুশি কুয়েট শিক্ষার্থীরা, ২ মাস পর শান্ত ক্যাম্পাস
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া:
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম পদত্যাগ করায় শিক্ষার্থীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। প্রায় দুই মাসের টানা আন্দোলনের পর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিলের আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের ভাষায়, ভবিষ্যতে যারা এই দুটি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, তাদের যেন শিক্ষার্থীবান্ধব হতে হবে এবং ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষ্ক্রিয় রাখতে হবে।
বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রশাসনের প্রস্তুতি:
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার জানান, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং পরিবেশ এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক। আগামী ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপসারিত উপ-উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া:
উপ-উপাচার্য পদ থেকে অপসারিত অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম অপসারণের সিদ্ধান্তকে পক্ষপাতমূলক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৪ ডিসেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর উপাচার্য তাকে কোনো প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজে সম্পৃক্ত করেননি। এমনকি ১১ জানুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় উপ-উপাচার্যের প্রশাসনিক ক্ষমতা বাতিল করে তাকে কার্যত অকার্যকর করে রাখা হয়।
তার ভাষায়, “আমি এখনও জানি না আমার অপরাধ কী ছিল, এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি।” তিনি এই সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত বলে অভিহিত করেছেন।
শিক্ষক সমিতির অবস্থান:
এদিকে কুয়েট শিক্ষক সমিতি এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, উপাচার্যকে চাপের মুখে অপসারণ করা হলে তা তারা মেনে নেবেন না। তারা বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে সভা আহ্বান করে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, সভা শেষে তারা এ বিষয়ে তাদের মতামত আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন।
কুয়েটে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ একদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করেছে, অন্যদিকে কিছু প্রশাসনিক ও শিক্ষকমহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সামনের দিনে কেমন নেতৃত্ব আসে এবং শিক্ষার পরিবেশ কতটা স্বাভাবিকভাবে পুনরুদ্ধার হয়, তা এখন দেখার বিষয়।