July 16, 2025
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাব্য চুক্তি ঝুঁকিতে ফেলেছেন জেলেনস্কি: ট্রাম্প

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাব্য চুক্তি ঝুঁকিতে ফেলেছেন জেলেনস্কি: ট্রাম্প

এপ্রি ২৪, ২০২৫

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটাতে একটি সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিই এখন সেই চুক্তির প্রধান অন্তরায়। ট্রাম্প দাবি করেছেন, রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে একটি চুক্তিতে সম্মত হলেও জেলেনস্কির অনড় অবস্থানেই আলোচনা জটিল হয়ে উঠেছে।

ক্রিমিয়া নিয়ে স্পষ্ট বার্তা:
সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ ছিল ট্রাম্পের ক্রিমিয়া বিষয়ক মন্তব্য। তিনি বলেছেন, ২০১৪ সালে বারাক ওবামার শাসনামলে ইউক্রেন একটিও গুলি না ছুঁড়ে অঞ্চলটি রাশিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিল। তিনি বলেন, “ক্রিমিয়ার মালিকানা এখন আলোচনার বিষয় নয়।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প কার্যত ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা এর আগে কখনো এত স্পষ্টভাবে প্রকাশ্যে আসেনি।

চুক্তির বিষয়ে ট্রাম্পের দাবি:
ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ থামাতে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন না। জেলেনস্কি পাল্টা প্রস্তাব হিসেবে উভয় পক্ষের জন্য শর্তহীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন, তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সাড়া দেয়নি।

জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া:
জেলেনস্কি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইউক্রেন কখনোই ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার দখলদারি স্বীকৃতি দেবে না। তিনি বলেন, এটি ইউক্রেনের সংবিধানের পরিপন্থী। তার মতে, একটি ন্যায্য শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের ভূখণ্ড অখণ্ড থাকা জরুরি।

ট্রাম্পের পাল্টা মন্তব্য:
এই প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, “জেলেনস্কির বক্তব্য শান্তি আলোচনার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।” তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সহজ ছিল, কিন্তু এখন জেলেনস্কির সঙ্গে চুক্তি করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
২০১৪ সালের মার্চে রাশিয়া একতরফাভাবে ক্রিমিয়া দখল করে নেয়। ইউক্রেনের রাজনৈতিক সংকটের সময় রাশিয়াপন্থী প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ অপসারিত হন এবং সেই সুযোগে রুশ সেনারা অঞ্চলটি দখল করে। পরে এক বিতর্কিত গণভোটে বলা হয়, ৯৭ শতাংশ মানুষ রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে পশ্চিমা বিশ্ব তখন ওই ভোটকে অবৈধ ঘোষণা করে।

ক্রিমিয়াকে ঘিরে মার্কিন অবস্থানের পরিবর্তনের ইঙ্গিত আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্পের মন্তব্য যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য পথকেই আরও জটিল করে তুলেছে। ইউক্রেনের জন্য এটি শুধু কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ নয়, তাদের ভূখণ্ড রক্ষার প্রশ্নেও একটি বড় সংকেত।

Leave a Reply