
আস্থা রাখতে হচ্ছে তাইজুল–হাসানদের ব্যাটিং সামর্থ্যেও
সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের অবস্থা এক রকম দ্বিধাজনক। ৪৪ ওভার খেলেই দিনের খেলা শেষ হয়ে গেছে রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরিতে। এমন সীমিত খেলার মধ্যেও যেটুকু সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেটাও পুরোপুরি আশার আলো নয়—বরং চিন্তার কারণও বটে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট হাতে রেখেও বাংলাদেশের লিড এখনো মাত্র ১১২ রান।
১. অবস্থান বিশ্লেষণ:
দিন শেষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের স্কোর বলছে, বড় রানের লিড এখনো অধরা। মেহেদী হাসান মিরাজ যেটা ৩৫০–৪০০ রানের লিড দেখতে চেয়েছিলেন, তা থেকে দল অনেক পিছিয়ে। মুমিনুল হকের কথায় বোঝা যাচ্ছে, এখন দল ৩০০ রানের লিড পেলেই সেটাকে “খুব ভালো” হিসেবে দেখছে। অর্থাৎ, প্রত্যাশা-বাস্তবতার মাঝখানে একটা ফাঁক স্পষ্ট।
২. ব্যাটিং পারফরম্যান্স:
প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও খুব একটা দৃঢ়তা দেখাতে পারেনি টপ অর্ডার। মুমিনুল নিজে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ (৬০ ও ৬৫ রানের) গড়লেও ইনিংস বড় করতে পারেননি—৮৪ বলে ৪৭ রানে থেমে যেতে হয়েছে তাঁকে। মাহমুদুলও কিছুটা সেট হয়ে আউট হয়েছেন। এটাই বলে দেয়, খেলোয়াড়েরা শুরু পাচ্ছেন, কিন্তু সেটাকে বড় রানে রূপান্তর করতে পারছেন না।
৩. মুমিনুলের বক্তব্যের তাৎপর্য:
মুমিনুলের বক্তব্যে একদিকে যেমন বাস্তবতা, তেমনি কিছুটা আত্মবিশ্বাসও দেখা যাচ্ছে। তিনি বলছেন, ৩০০ রানের লিড ভালো হবে, আবার এ-ও বলছেন যে নিচের দিকের ব্যাটারদের ওপরও আস্থা আছে। একে কেউ কেউ ব্যাটিং ব্যর্থতার ইঙ্গিত হিসেবে ধরতে পারেন, তবে মুমিনুল পরিষ্কার করে দিয়েছেন—এটা টেলএন্ডারদের উপরে নির্ভরশীলতা নয়, বরং তাঁদের ব্যাটিং সামর্থ্যকেই প্লাস পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন তিনি।
৪. কৌশলগত ব্যাটিংয়ের গুরুত্ব:
‘ক্যালকুলেটিভ ব্যাটিং’ বা হিসেব করে ব্যাটিং করার দিকটি বারবার উঠে এসেছে মুমিনুলের কথায়। আগামী দিনে সকালে কন্ডিশন কঠিন হবে বলেই এমন মনোভাব। পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করার প্রয়োজনীয়তা, সেশনের গুরুত্ব, এবং সুযোগ কাজে লাগানোর মানসিকতা—সব মিলিয়ে পরের দিনের খেলার জন্য একটি পরিষ্কার রূপরেখা তৈরি করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ এখনো ম্যাচে আছে, তবে সুবিধাজনক অবস্থানে বলা যাবে না। টপ অর্ডারের ব্যর্থতা কিছুটা চাপ বাড়ালেও মুমিনুল ও দলের ভেতরের আত্মবিশ্বাস আশাব্যঞ্জক। টেলএন্ডারদের ব্যাটিং দক্ষতা ও ক্যালকুলেটিভ ব্যাটিংয়ের উপর নির্ভর করে আগামী দিনের চিত্র অনেকটাই নির্ধারিত হবে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লড়াইটা কৌশল ও মানসিক দৃঢ়তার—বাংলাদেশ সেটা ধরে রাখতে পারলে, একটা ভালো অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ এখনো জীবিত।