July 19, 2025
শেখ হাসিনাসহ পরিবারের ১০ জনের এনআইডি ‘লকড’

শেখ হাসিনাসহ পরিবারের ১০ জনের এনআইডি ‘লকড’

এপ্রি ২১, ২০২৫

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি বিভাগ) শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারভুক্ত ১০ জনের জাতীয় পরিচয়পত্র স্থগিত বা “লক” করেছে। যদিও বিষয়টি ১৬ ফেব্রুয়ারি কার্যকর করা হয়েছিল, তা প্রকাশ্যে আসে ১৫ এপ্রিলের পর। ফলে লকড এনআইডি ব্যবহার করে এখন আর সেবা গ্রহণ, যাচাই বা ভেরিফিকেশন করা যাবে না। তবে ভোট দেওয়া বা নির্বাচনে অংশগ্রহণে এর কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।

যাদের এনআইডি স্থগিত করা হয়েছে:

  • শেখ হাসিনা – সাবেক প্রধানমন্ত্রী
  • সজীব ওয়াজেদ জয় – পুত্র, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা
  • সায়মা ওয়াজেদ পুতুল – কন্যা, মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম বিশেষজ্ঞ
  • শেখ রেহানা সিদ্দিক – বোন
  • টিউলিপ সিদ্দিক – ব্রিটিশ এমপি, ভাগ্নি
  • আজমিনা সিদ্দিক – ভাগ্নি
  • রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক – ভাগ্নে
  • তারিক আহমেদ সিদ্দিক – নিরাপত্তা উপদেষ্টা
  • শাহিন সিদ্দিক – তারিকের স্ত্রী
  • বুশরা সিদ্দিক – তাদের মেয়ে

প্রশাসনিক দিক:

এনআইডি লক করার নির্দেশ মৌখিকভাবে দিয়েছিলেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর। বর্তমানে তিনি বিদেশ সফরে রয়েছেন, যা সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতা ও প্রক্রিয়ার প্রশ্ন তুলেছে।

দুদকের পদক্ষেপ ও এর প্রেক্ষাপট:

এ ঘটনার আগেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ১২৪টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দেয় আদালত (১১ মার্চ)। দুটি ঘটনাই প্রশাসনিকভাবে সংযুক্ত মনে করা হচ্ছে এবং সম্ভবত দুর্নীতির অনুসন্ধান বা সম্পদ যাচাইয়ের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

১. আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা:

এনআইডি লক হওয়া মানে নাগরিকের ডিজিটাল অস্তিত্ব একপ্রকার অকার্যকর হয়ে যাওয়া। ব্যাংক হিসাব খোলা, মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন, সরকারি-বেসরকারি সেবা গ্রহণে এনআইডির প্রয়োজন হয়। ফলে প্রশাসনিক জটিলতায় পড়বেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা, যদিও নির্বাচন সংক্রান্ত অধিকার অক্ষুণ্ন রয়েছে।

২. রাজনৈতিক তাৎপর্য:

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দুতে। তাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকেই। আবার অন্যপক্ষ এটিকে সুশাসনের প্রতিফলন বলেও দেখাতে পারে।

৩. আন্তর্জাতিক প্রভাব:

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের এমপি হওয়ায়, এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মিডিয়া এবং বিদেশি কূটনৈতিক অঙ্গনেও আলোচিত হতে পারে। এতে দেশের ভাবমূর্তির ওপরও প্রভাব পড়তে পারে।

৪. প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা:

এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে লিখিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা প্রয়োজন ছিল। মহাপরিচালকের মৌখিক নির্দেশে এত বড় পদক্ষেপ নেওয়া প্রশাসনিক অনিয়মের ইঙ্গিত দেয় এবং এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

Leave a Reply