
গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় অন্তত ৬৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। শুক্রবার ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলা এসব হামলার খবর নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
তীব্র হামলার লক্ষ্য গাজা সিটি ও উত্তর গাজা
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নিহতদের অধিকাংশই গাজা সিটি ও উত্তর গাজার বাসিন্দা। তবে শুক্রবার গাজার উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালায়।
ইসরায়েলি ঘাঁটি থেকে সরাসরি হামলা
সূত্র জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের শহর রাফার কাছে শাবৌর ও তেল আস সুলতান এলাকায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ঘাঁটি গেড়ে অবস্থান করছে। এই ঘাঁটিগুলো থেকেই চালানো হয়েছে সর্বশেষ হামলা।
ইসরায়েলের ‘চূড়ান্ত বিজয়’ মন্তব্য
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, “হামাসকে পরাজিত করা ও জিম্মিদের মুক্ত করাই আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য। ইসরায়েল এখন চূড়ান্ত বিজয়ের পথে।” তিনি জানান, ইসরায়েল এই লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর।
ধর্মীয় আচারেও থেমে নেই বিভীষিকা
শুক্রবার ছিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন গুড ফ্রাইডে। তবে ইসরায়েলের তীব্র হামলার মাঝেও গাজার খ্রিস্টানরা স্থানীয় গির্জাগুলোতে সীমিত পরিসরে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করেছেন।
পটভূমি: ৭ অক্টোবর থেকে টানা যুদ্ধ
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে হামাস। এর পরদিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে।
১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অভিযানে ইসরায়েল কিছুটা বিরতি দেয় ১৯ জানুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপের মুখে। কিন্তু বিরতির দুই মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই, গত ১৮ মার্চ থেকে ফের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
দ্বিতীয় দফার অভিযানে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা
নতুন করে শুরু হওয়া অভিযানে মাত্র এক মাসে দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলা ফিলিস্তিনিদের মানবিক সংকটকে আরও গভীরতর করছে। সাম্প্রতিক হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু ও আহত হওয়ার সংখ্যা বেড়েই চলেছে, যার ফলে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ আরও তীব্র হচ্ছে।