July 8, 2025
অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতি নয়, পূর্ণাঙ্গ চুক্তি চায় হামাস

অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতি নয়, পূর্ণাঙ্গ চুক্তি চায় হামাস

এপ্রি ১৯, ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবারের হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৪ জন, যাদের মধ্যে একটি পরিবারের ১০ সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা চলছে, তবে তা শর্তের বেড়াজালে আটকে গেছে

হামাসের পূর্ণাঙ্গ চুক্তির দাবি, অন্তর্বর্তী প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

ইসরায়েল ৪৫ দিনের একটি অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও হামাস তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাসের শীর্ষ নেতা খলিল আল-হায়া এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, তারা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি চুক্তি চান, যার আওতায়:

  • গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে,
  • ইসরায়েলের কারাগারে থাকা সব ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে,
  • এবং গাজা পুনর্গঠন শুরু হবে।

এর বিনিময়ে হামাস তাদের কাছে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন হায়া। তিনি আরও বলেন, “নেতানিয়াহুর সরকার সাময়িক যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আমরা এর অংশ হব না।

‘অস্ত্র সমর্পণ নয়’—হামাসের সাফ জানিয়ে দেওয়া বার্তা

ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল হামাসের নিরস্ত্রীকরণ। হামাস এটিকে ‘লাল দাগ’ হিসেবে চিহ্নিত করে জানিয়ে দিয়েছে, ‘অস্ত্র সমর্পণ’ কোনোভাবেই আলোচনার বিষয় নয়

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাষ্ট্র হামাসের অবস্থানকে সহিংসতা-প্রবণ বলে আখ্যায়িত করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেছেন, “হামাস শান্তিতে নয়, সহিংসতায় আগ্রহী।” তিনি আরও বলেন, “জিম্মিদের মুক্তি দাও, না হলে নরকের মুখোমুখি হও—এই অবস্থানেই আছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিপর্যস্ত গাজা: শিশুদের মধ্যে বাড়ছে মানসিক সমস্যা

গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় দিন দিন চরমে উঠছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, অবরুদ্ধ উপত্যকার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ আটকে রয়েছে, এবং মানসিক স্বাস্থ্যের চাহিদা ভয়াবহভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে। সাহায্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।

চিকিৎসাকর্মীদের লক্ষ্য করেও হামলা

সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে গুলি চালিয়ে ১৫ জন চিকিৎসাকর্মীকে হত্যা করে। এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

ইসরায়েলি মন্ত্রী ব্রিটেনে গ্রেপ্তারি ভয়ে পালালেন

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার যুক্তরাজ্যে সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন। লন্ডনভিত্তিক গ্লোবাল লিগ্যাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (জিএলএএন) জানিয়েছে, তারা তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন জানিয়েছিল। একই দাবি জানায় হিন্দ রজব ফাউন্ডেশন। এরপরই তিনি দ্রুত যুক্তরাজ্য ত্যাগ করেন।

যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অচলাবস্থা এবং ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলার ফলে গাজা এখন এক গভীর মানবিক সংকটে। রাজনৈতিক সমাধানের পথ খোলা থাকলেও পারস্পরিক অনমনীয়তা এবং আস্থা সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

Leave a Reply