November 13, 2025
রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না, নির্বাচন করলে আবার জিতব: সাকিব

রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না, নির্বাচন করলে আবার জিতব: সাকিব

এপ্রি ১৬, ২০২৫

মাত্র ছয় মাসের রাজনৈতিক যাত্রা—তাতেই নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে সাকিব আল হাসানের জীবনে। জনপ্রিয় এই ক্রিকেটার গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিতর্কিত ছবি তোলাসহ দর্শকের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে নিজের অবস্থান আরও জটিল করে তোলেন। অভ্যুত্থান–পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়, সামনে আসে দুর্নীতির অভিযোগও।

সম্প্রতি দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব খোলাখুলি কথা বলেছেন নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সিদ্ধান্ত এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে।

‘রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না’ — সাকিবের আত্মবিশ্বাস

সাকিব মনে করেন, রাজনীতিতে তাঁর অংশগ্রহণ ভুল ছিল না। তিনি বলেন,

“যদি আমার রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ভুল হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যেকোনো পেশাজীবীর জন্যও তা ভুল হবে। রাজনীতিতে যোগ দেওয়া যেকোনো নাগরিকের অধিকার। আমি যখন এই সিদ্ধান্ত নিই, তখন মনে করেছিলাম, আমি মাগুরার মানুষের জন্য কিছু করতে পারি।”

তিনি আরও বলেন, “মানুষ ভোট দেবে কি দেবে না, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে আমি এখনো বিশ্বাস করি, আমি সঠিক ছিলাম।”

নির্বাচনে জয় এবং জনআস্থা নিয়ে মন্তব্য

সাকিবের দাবি, তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে এবং তিনি আবার দাঁড়ালে জয়লাভ করবেন।

“আমি বিশ্বাস করি, মাগুরার মানুষ এখনো আমাকে চায়। আমি আবার নির্বাচনে অংশ নিলে তারাই আমাকে বিজয়ী করবে। দুর্ভাগ্যবশত, আমি তাঁদের যেভাবে সেবা করতে চেয়েছিলাম, সেভাবে পারিনি—এটা আমি মেনে নিয়েছি।”

‘সিস্টেমের ভেতর থেকেই বদল সম্ভব’

রাজনীতিতে আসার প্রেরণা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাকিব বলেন,

“যদি কেউ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে চায়, তবে সিস্টেমের ভেতর আসতেই হবে। বাইরে থেকে থেকে কিছু বদলানো সম্ভব নয়।”

রাজনীতিতে সময় না দেওয়ার আক্ষেপ

রাজনীতিতে সক্রিয় সময় নিয়ে সাকিব বলেন,

“নির্বাচনের পর আমি কেবল তিন দিনের জন্য মাগুরা গিয়েছিলাম। চার-পাঁচ মাস ক্রিকেট খেলেছি, বাকি সময় দেশের বাইরে ছিলাম। সেভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সুযোগই পাইনি।”

প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও সাকিবের অগ্রাধিকার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শ প্রসঙ্গে সাকিব জানান,

“প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘তোমার রাজনীতি করতে হবে না, তুমি ক্রিকেটেই মন দাও।’ আমি সে পরামর্শ মেনে চলেছি। আমার পরিকল্পনা ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা, তারপর ধীরে ধীরে রাজনীতিতে মনোযোগ দেওয়া।”

ছয় মাসের রাজনৈতিক অধ্যায় সাকিবের জীবনে বিতর্ক, চ্যালেঞ্জ আর আত্মসমালোচনার এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে। যদিও পরিস্থিতি অনেকটাই প্রতিকূল ছিল, সাকিব এখনো মনে করেন—উদ্দেশ্য যদি জনগণের সেবা হয়, তবে রাজনীতিতে আসা কোনো ভুল নয়।

Leave a Reply