
সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত, অপেক্ষা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
বাংলাদেশের ভোজ্যতেল বাজারে আবারও মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন নতুন করে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
সংগঠনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা থেকে ১৮৯ টাকা করা হবে। তবে এখনো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়া যায়নি। আগামী মঙ্গলবার এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কোম্পানির অবস্থান
ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান টি কে গ্রুপের পরিচালক সফিউল আথহার তাসলিম জানিয়েছেন, দর বাড়ানোর প্রস্তাবনা দেওয়া হলেও এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি।
ঈদের আগে দর বাড়ানোর চেষ্টা
রোজার মধ্যে কোম্পানিগুলো তেলের দাম বাড়াতে চেয়েছিল, তবে সরকারের পক্ষ থেকে তখন অনুমতি দেওয়া হয়নি। গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যবসায়ী সংগঠন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দর-কষাকষি চলছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তাব অনুমোদন করলে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতল ৮৫২ টাকা থেকে বেড়ে ৯২২ টাকা হতে পারে।
খোলা তেলের দামও বাড়ছে
বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে।
- খোলা সয়াবিন তেল: ১৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ১৬৯ টাকা
- খোলা পাম তেল: একই হারে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব
মূল্যবৃদ্ধির কারণ ও পটভূমি
মিল মালিকরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং কর সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়া এই দাম বাড়ানোর পেছনে প্রধান দুটি কারণ।
গত ৩১ মার্চ ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কর ছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়। পরদিনই (১ এপ্রিল) ব্যবসায়ীরা নতুন দাম কার্যকরের ঘোষণা দেন এবং বিষয়টি লিখিতভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (BTTC)-কে জানানো হয়।
চলমান আলোচনা ও সিদ্ধান্তহীনতা
এরপর একাধিক দফায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হয় (রবি, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার), তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এরই মধ্যে ট্যারিফ কমিশন এনবিআর-কে (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) কর ছাড়ের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছে, যদিও এনবিআর এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।