
আল-আহলি হাসপাতালেও ইসরায়েলি হামলা, ধ্বংস আইসিইউ ও অস্ত্রোপচার বিভাগ
গাজা সিটির প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে মিসাইল হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ)। অনলাইনে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, হাসপাতালের দোতলা ভবনে মিসাইল আঘাত হানার পর বিশাল আগুনের কুণ্ডলি ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। এতে হাসপাতালের আইসিইউ এবং অস্ত্রোপচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে।
রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ও আতরা আতঙ্ক
হামলার সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকা বেশ কয়েকজন রোগীকে বিছানা থেকে নামতে ও নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে দ্রুত সরে যেতে দেখা গেছে। হামলার ফলে হাসপাতালে থাকা নার্স, চিকিৎসক এবং রোগীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ইসরায়েলি হুমকি ও অপসারণের সময়সীমা
একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানান, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর এক কর্মকর্তা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসককে ফোন করে জানায়, ২০ মিনিটের মধ্যে সবাইকে সরিয়ে ফেলতে হবে, নইলে হামলা চালানো হবে।
এই হুমকির পরপরই রাতের বেলা রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে বের হয়ে যেতে শুরু করেন। এছাড়া হাসপাতালের আশপাশে আশ্রয় নেওয়া নারী ও শিশুরাও এলাকা ত্যাগ করেন।
পূর্বের হামলার পুনরাবৃত্তি
এর আগেও ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে একই আল-আহলি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী কয়েকশ মানুষের মৃত্যু ঘটায় ইসরায়েলি বাহিনী। সেই সময় ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তোলে।
আল-আহলি হাসপাতাল বর্তমানে গাজা শহরের অন্যতম প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে কাজ করছিল, কারণ ইসরায়েল ইতোমধ্যেই গাজা সিটির সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবিক সংকট
হামাস এই হামলাকে “ভয়াবহ অপরাধ” বলে আখ্যা দিয়েছে। যদিও এ পর্যন্ত হতাহতের কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা নিশ্চিতভাবে পাওয়া যায়নি। তবুও হাসপাতালের মতো একটি মানবিক স্থাপনায় হামলার ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক মূল্যবোধের চরম লঙ্ঘন বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
গাজায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে হাসপাতাল, স্কুল, আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলা নিরবিচারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ হয়ে উঠেছে। আল-আহলি হাসপাতালের উপর এই সর্বশেষ হামলা সেই নিষ্ঠুরতারই নতুন অধ্যায়।