July 8, 2025
১৩ বছর আগে বিলাসবহুল হোটেলে যা ঘটেছিল সাইফের সঙ্গে

১৩ বছর আগে বিলাসবহুল হোটেলে যা ঘটেছিল সাইফের সঙ্গে

এপ্রি ১২, ২০২৫

নতুন বছরের শুরুতেই একের পর এক বিপদে পড়েছেন বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান। মাসখানেক আগে তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল এক দুর্বৃত্ত, আর এখন ১৩ বছর আগের একটি ঝামেলা আবার তার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঝামেলায় সাইফ একা ছিলেন না, সঙ্গী ছিলেন তার বন্ধু এবং সহ-অভিনেত্রীরা—কারিশমা কাপুর, মালাইকা অরোরা, এবং অমৃতা অরোরা।

কী ছিল সেই ঝামেলা?

ঘটনাটি ১৩ বছর আগে মুম্বাইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে ঘটেছিল, যেখানে সাইফ আলী খান তার বন্ধুদের নিয়ে খাওয়াদাওয়া করতে গিয়েছিলেন। তারা সবাই একে অপরের সঙ্গে গল্পগুজবে মশগুল ছিলেন এবং কিছুটা উচ্চস্বরে হাসাহাসি করছিলেন। সাইফ ও তার বন্ধুদের হাসাহাসিতে আপত্তি জানান ইকবাল মীর শর্মা নামের এক প্রবাসী ভারতীয় ব্যবসায়ী, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। শর্মা খাবারের টেবিলে তাদের শব্দের জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং সাইফসহ সবাইকে চুপ থাকতে বলেন।

এই কথা শুনে সাইফ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন এবং তাকে ধমক দিতে শুরু করেন। এরপর কথাকাটাকাটি আরও তীব্র হতে থাকে, এবং শেষ পর্যন্ত সাইফ তার রাগ সামলাতে না পেরে ওই ব্যবসায়ীর নাকে ঘুষি মেরে দেন। সাইফের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি ওই ব্যবসায়ীর উপর শারীরিক আক্রমণ চালিয়েছেন। পরে ইকবাল মীর শর্মা কোলাবা থানায় সাইফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

আদালত পর্যন্ত গড়ানো মামলা

এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে আদালতে যান শর্মা। সাইফের বিরুদ্ধে শারীরিক আক্রমণের অভিযোগ তোলেন তিনি। যদিও সাইফ একেবারেই ভিন্নভাবে ঘটনার বর্ণনা দেন। তার দাবি ছিল যে, ব্যবসায়ী শর্মা তার সঙ্গে থাকা নারীদের অসম্মান করেছিলেন, যা সাইফ সহ্য করতে পারেননি। এই ঘটনার পর সাইফ শর্মাকে ক্ষমা চাইলে, শর্মা তা মেনে নেননি এবং উল্টো শৌচাগারে ঢুকে সাইফকে মারধর শুরু করেন।

মামলা ও সাক্ষী

এ ঘটনার সাক্ষী ছিলেন সাইফের বন্ধু অমৃতা অরোরা ও মালাইকা অরোরা। ২০১৪ সালে এই ঘটনায় সাইফ আলী খান, শাকিল লাদাখ এবং বিলাল আমরোহির বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়। ২০১৭ সালে, সাইফের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত আঘাতের অভিযোগ তোলা হয়, এবং অভিযোগ উঠেছিল যে শিল্পপতির শ্বশুরকেও তিনি হেনস্তা ও মারধর করেছিলেন।

বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া

২০১৯ সালে সেশন আদালত সাইফের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করে দিয়েছিল, তবে ২০২৩ সালে আদালত তাকে বেকসুর খালাস করে। তবে, বিচার শেষ হওয়ার আগেও সাইফ এবং বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার আগে, আদালত প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। সেই কারণে, গত সপ্তাহে মামলার তদন্তের জন্য মালাইকা অরোরাকে তলব করা হয়েছিল।

এই পুরোনো মামলা এখনও সাইফের পিছু ছাড়ছে না, এবং তার জন্য এটি এক অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও আদালত তাকে খালাস দিয়েছে, তবে বিভিন্ন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার এখনও চলছে। সাইফের পক্ষে তার বর্ণনা, এবং মামলার সাক্ষীদের বয়ান, ভবিষ্যতে এই ঘটনার রায় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply