July 16, 2025
ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতিতে ‘মার্চ ফর গাজা’: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল

ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতিতে ‘মার্চ ফর গাজা’: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল

এপ্রি ১২, ২০২৫

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে এবং গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানাতে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ মিছিল করে উদ্যানে এসে যোগ দেন এই মানবিক ও প্রতিবাদী সমাবেশে।

সকাল থেকেই রাজধানীর টিএসসি, শাহবাগ, মৎস্যভবন এলাকা থেকে মিছিলসহ উদ্যানে আসতে থাকেন হাজারো মানুষ। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের গেট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশ করেন তারা। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, গায়ে সংহতিমূলক স্লোগানযুক্ত টি-শার্ট এবং হাতে নানা রকম প্ল্যাকার্ড ছিল চোখে পড়ার মতো।

উদ্যানে মানবিকতার মঞ্চ

উদ্যানের লেকপাড়ে তৈরি করা হয় প্রধান মঞ্চ, যেখানে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের জন্য স্থাপন করা হয় একাধিক মেডিকেল ক্যাম্প এবং খাবার বিতরণ পয়েন্ট। টিএসসি, শাহবাগসহ আশপাশের এলাকায় দেখা যায় স্বেচ্ছাসেবকদের—তারা পানি, শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছেন অংশগ্রহণকারীদের।

বর্ণিল একাত্মতা ও প্রতিরোধের বার্তা

সমাবেশে দেখা যায়, কেউ মাথায় ফিলিস্তিনের ব্যাজ, কেউ গায়ে ফিলিস্তিনি পতাকা জড়ানো, কেউ আবার রিকশায় উড়িয়েছেন পতাকা। উদ্যান চত্বরে গড়ে ওঠে পতাকা, ব্যাজ, টি-শার্টের অস্থায়ী দোকান, যা কিনে নিচ্ছিলেন আগত অনেকেই। গোটা পরিবেশ জুড়ে ছিল প্রতিবাদ আর একাত্মতার আবহ।

পিরোজপুরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তামান্না ইয়াসমিন বলেন, “ইসরায়েল যেভাবে নারী-শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই নির্মমতার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ জানাতে হবে।”

পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থেকে আসা গৃহবধূ ঝর্না আক্তার বলেন, “আরব বিশ্ব যেখানে নিশ্চুপ, বাংলাদেশ যেন অন্তত একটা অবস্থান নিতে পারে—সেই প্রত্যাশা থেকে এসেছি।”

একজন রিকশাচালক, যিনি নিজেকে আনোয়ার পাগলা নামে পরিচয় দেন, বলেন, “নেতানিয়াহু আলোচনায় বসো। মুসলমানদের ধ্বংস করতে আসছো—এইভাবে পারবা না। তুমি নিজেই ধ্বংস হয়ে যাইবা।”

রাজনৈতিক ও সামাজিক ঐক্য

‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট’ বাংলাদেশ এই কর্মসূচির আয়োজক। কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, এনসিপি, আলেম-ওলামা সমাজসহ নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সমর্থন ছিল। এই বহুমাত্রিক অংশগ্রহণ ‘গাজা’র প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সহমর্মিতা ও মানবতাবোধের প্রকাশ ঘটিয়েছে।

Leave a Reply