
চীনের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে ‘আশাবাদী’ ট্রাম্প, বলছে হোয়াইট হাউস
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি—চীন ও যুক্তরাষ্ট্র—মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ আবারও উত্তেজনার নতুন মাত্রা পেয়েছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে। এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া: ‘আঘাত পেলে আরও জোরে জবাব’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন,
“প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করা হলে তিনি আরও কঠোর জবাব দেবেন।”
যদিও ট্রাম্পের শুল্কনীতি বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে, তবুও তিনি এটিকে সাফল্য হিসেবে দাবি করছেন।
চুক্তির সম্ভাবনা ও আলোচনা
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনের সঙ্গে একটি চুক্তির ব্যাপারে ট্রাম্প ‘আশাবাদী’।
চীন-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার সুযোগ রাখতে ৯০ দিনের শুল্ক বিরতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, আর এই সময়ের মধ্যে ১৫টি দেশ আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
ট্রাম্প বলেন,
“চীনের সঙ্গে একটি ভালো চুক্তি করতে পারলে ভালো লাগবে। মনে হচ্ছে, উভয় দেশের জন্য ভালো কিছু করা সম্ভব হবে।”
মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বলেন,
“আমরা প্রথম দেশ হিসেবে একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি আছি। তবে চুক্তি হতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উপকারী।”
চীনের পাল্টা পদক্ষেপ ও বর্তমান পরিস্থিতি
এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। এর জবাবে এবার চীন মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
চীনের এই পদক্ষেপের পর ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম Truth Social–এ পোস্ট করে বলেন,
“আমাদের শুল্কনীতি সত্যিই ভালো করছে… এটা আমেরিকা ও বিশ্বের জন্য অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ! এটা দ্রুত এগোচ্ছে।”
বাজারে প্রতিক্রিয়া: উদ্বেগ ও অস্থিরতা
তবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ:
- মার্কিন সরকারি বন্ড বিক্রি বেড়েছে
- ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে
- শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে
বিশ্ববাজার ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত, আর চীনের পাল্টা শুল্ক এই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বর্তমান চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক গুরুতর হুমকি হয়ে উঠছে। উভয় দেশের শক্ত অবস্থানের কারণে একদিকে যেমন চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে পাল্টাপাল্টি শুল্ক বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলছে। এখন দেখার বিষয়, আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি কতটা স্থিতিশীল করা সম্ভব হয়।