
অনলাইনে ‘আউটসোর্সিং’ কাজ দেওয়ার কথা বলে করতেন প্রতারণা
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সম্প্রতি ঢাকার লালবাগ এলাকা থেকে অনলাইন প্রতারণার অভিযোগে দুই যুবক—সুকান্ত বিশ্বাস (২৪) ও মানব বৈদ্য (২৩)—কে গ্রেপ্তার করেছে। এ চক্রটি মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (বিশেষত টেলিগ্রাম) বিজ্ঞাপন দিয়ে আউটসোর্সিংয়ের কাজ শেখানোর কথা বলে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করত। পরে বিভিন্ন পরিচয়, যেমন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সেজে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায় করত।
প্রতারণার কৌশল:
- টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আস্থা অর্জন।
- সিমকার্ডের অপব্যবহার: একাধিক সিম ব্যবহারের মাধ্যমে ওটিপি সংগ্রহ করে নতুন হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট চালু করত।
- নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা বা অন্য প্রতিষ্ঠানের পরিচয় দিয়ে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা।
- “অনলাইন আউটসোর্সিং কাজ” দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক লেনদেন করিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।
জব্দকৃত আলামত:
- ৬টি মোবাইল ফোন
- ১৪টি সিমকার্ড
আইনি পদক্ষেপ:
পল্টন থানায় দায়ের করা একটি নিয়মিত মামলার ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিআইডির তদন্তে আরও তথ্য পাওয়া গেলে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
সামাজিক প্রভাব ও সতর্কবার্তা:
এই ধরনের প্রতারণা শুধু ব্যক্তিগত আর্থিক ক্ষতির কারণ নয়, বরং অনলাইন আউটসোর্সিং জগতে সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করে। যারা প্রকৃতভাবে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন, তাঁদের জন্য এটি একটি নেতিবাচক ইঙ্গিত তৈরি করে।
সতর্কতা ও পরামর্শ:
- অনলাইনে অজানা সূত্র থেকে কাজ বা প্রশিক্ষণের প্রস্তাব পেলে তা যাচাই-বাছাই করুন।
- সরকারি কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামে কারও সঙ্গে লেনদেন করার আগে নিশ্চিত হন ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে।
- সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখলে দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে অভিযোগ জানান।
এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায়, প্রযুক্তির সুযোগ যেমন রয়েছে, তেমনি এর অপব্যবহার করে মানুষকে প্রতারিত করার ক্ষেত্রও তৈরি হচ্ছে। তাই সচেতনতা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তৎপরতা একসঙ্গে চললেই এসব প্রতারণা প্রতিরোধ করা সম্ভব।