
সিনেপ্লেক্স থেকে নেমে গেল শাকিব খানের ঈদের সিনেমা
এবারের ঈদে ছয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, যার মধ্যে শাকিব খান অভিনীত ‘অন্তরাত্মা’ অন্যতম। তবে মুক্তির পরপরই ছবিটি দর্শকের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়। স্টার সিনেপ্লেক্সের মতো মাল্টিপ্লেক্সেও দ্বিতীয় দিনেই সিনেমাটি নামিয়ে ফেলা হয়েছে। এই ব্যর্থতা নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
১. প্রচারণার অভাব
- ‘অন্তরাত্মা’ সিনেমার প্রচারণা ছিল খুবই কম।
- শাকিব খানসহ ছবির অন্যান্য তারকাদের প্রচারণায় সক্রিয় দেখা যায়নি, যা দর্শকদের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে।
- বর্তমানে সিনেমার বাজারে প্রচারণা অন্যতম মূল কৌশল, যা এ সিনেমার ক্ষেত্রে ছিল অনুপস্থিত।
২. দর্শকের স্বাভাবিক আকর্ষণের অভাব
- ‘অন্তরাত্মা’র ট্রেলার বা গানগুলোও খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেনি।
- ঈদে দর্শকরা মূলত বড় বাজেট ও আকর্ষণীয় কন্টেন্টের সিনেমার প্রতি আগ্রহী হয়, যা ‘অন্তরাত্মা’ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
- সিনেমার গল্প, নির্মাণ ও উপস্থাপনা দর্শকদের আকৃষ্ট করতে পারেনি।
৩. প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া
- একই ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘বরবাদ’ সিনেমাটি বড় বাজেট ও ব্যাপক প্রচারণার কারণে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
- ‘বরবাদ’-এর প্রদর্শনী সংখ্যা স্টার সিনেপ্লেক্সসহ বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্সে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা দেখায় যে এটি বক্স অফিসে ভালো করছে।
- ‘অন্তরাত্মা’র বিপরীতে ‘দাগি’, ‘জংলি’, ‘জ্বীন-৩’ ও ‘চক্কর ৩০২’-এর মতো ছবির প্রতিযোগিতাও ছিল।
৪. স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে নামিয়ে ফেলার কারণ
- স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ আহমেদ জানিয়েছেন, “কোনো সিনেমা যদি দর্শক টানতে না পারে, আমরা তা নামিয়ে দর্শকের পছন্দের তালিকায় থাকা সিনেমার শো বাড়িয়ে দিই।”
- এর মানে, বক্স অফিস পারফরম্যান্সই মূল কারণ, যা ‘অন্তরাত্মা’ প্রদর্শনী বন্ধের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে।
৫. শাকিব খানের প্রভাব ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
- শাকিব খান বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক হলেও, তার সিনেমা প্রচার ও নির্মাণের মানের ওপর নির্ভর করে সফল হবে কি না।
- ‘বরবাদ’ সিনেমাটি ভালো ব্যবসা করলেও, ‘অন্তরাত্মা’র ব্যর্থতা দেখিয়েছে যে শুধুমাত্র তারকা-নির্ভর সিনেমা আজকের বাজারে সফল হওয়ার নিশ্চয়তা নয়।
‘অন্তরাত্মা’র ব্যর্থতার মূল কারণ প্রচারণার অভাব, গল্পের দুর্বলতা, প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া ও দর্শকের স্বাভাবিক আগ্রহের অভাব। এই ব্যর্থতা শাকিব খান এবং বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি শিক্ষা হতে পারে যে, কেবলমাত্র তারকাখ্যাতির ওপর নির্ভর না করে বেশি বাজেট, উন্নত নির্মাণশৈলী ও স্ট্র্যাটেজিক মার্কেটিং পরিকল্পনা প্রয়োজন।