April 25, 2025
নাসার আবিষ্কার: পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলে লুকানো বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র

নাসার আবিষ্কার: পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলে লুকানো বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র

এপ্রি ২, ২০২৫

অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর চারপাশে একটি অদৃশ্য বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সন্ধান করছিলেন। অবশেষে নাসার এনডুরেন্স মিশনের মাধ্যমে এই লুকানো শক্তির অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। নতুন এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলজুড়ে বিস্তৃত এবং তা শান্ত হলেও অত্যন্ত শক্তিশালী


নতুন বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের বৈশিষ্ট্য

✅ অবস্থান: পৃথিবী থেকে ২৫০ থেকে ৭৭০ কিলোমিটার ওপরে
✅ কার্যপ্রক্রিয়া:

  • পৃথিবীর ওপরে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে পাতলা হয়, ফলে সেখানে পরমাণুগুলো চার্জযুক্ত কণায় বিভক্ত হয়ে ইলেকট্রন ও আয়নে পরিণত হয়
  • সাধারণত মাধ্যাকর্ষণ আয়নকে নিচে নামায়, আর হালকা ইলেকট্রন ওপরে চলে যায়।
  • কিন্তু চার্জযুক্ত কণাগুলো আলাদা থাকতে পারে না, তাই একটি অ্যাম্বিপোলার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়।
  • এই ক্ষেত্র আয়নকে ওপরে ঠেলে দেয় এবং ইলেকট্রনকে ধীর করে

এই অদৃশ্য শক্তি এক ধরনের ভারসাম্য তৈরি করে, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও মহাকাশের সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে

এ আবিষ্কারের গুরুত্ব

🔹 নতুন শক্তির উৎস: নাসার বিজ্ঞানী গ্লিন কলিনসন জানিয়েছেন, এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র কণাগুলোকে উত্তপ্ত না করে শান্তভাবে ওপরে নিয়ে যায়, যা মহাকাশে প্রবাহিত হতে পারে।
🔹 সুপারসনিক গতি: এই শক্তি হাইড্রোজেন আয়নকে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে, যা মাধ্যাকর্ষণের বিপরীত শক্তির চেয়েও ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী।
🔹 বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নতুন দিগন্ত: এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের গঠন ও মহাকাশের সঙ্গে তার সম্পর্ক বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে।

এনডুরেন্স মিশন ও গবেষণা প্রক্রিয়া

  • নাসা ২০২২ সালের ১১ মে এনডুরেন্স মিশনের অধীনে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করে।
  • রকেটটি পৃথিবী থেকে ৭৬৮ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছে বায়ুমণ্ডলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে
  • সেই তথ্য পর্যালোচনা করেই নতুন ধরনের এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের অস্তিত্ব নিশ্চিত করা হয়

নাসার বিজ্ঞানীদের এ আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও মহাকাশের সংযোগ বুঝতে এটি বড় ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে এই গবেষণা মহাকাশ অভিযানের নতুন দিক উন্মোচনে সহায়ক হতে পারে।

Leave a Reply