April 26, 2025
দেশের ১৮ জেলায় আজ উদযাপন হচ্ছে ঈদ

দেশের ১৮ জেলায় আজ উদযাপন হচ্ছে ঈদ

মার্চ ৩০, ২০২৫

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলমানদের একাংশ আগাম ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে। দেশের অন্তত ১৮টি জেলার শতাধিক গ্রামে রবিবার ঈদ পালিত হয়েছে। এটি কি শুধুই সৌদি আরবের অনুসরণ, নাকি এর পেছনে রয়েছে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা?

ঈদ উদযাপনের কারণ ও ভিত্তি

যেসব মুসলমান সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করেন, তাদের বিশ্বাস চাঁদ একবার উদিত হলে তা সমগ্র বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য। তারা মনে করেন, রমজান ও ঈদ পালনের ক্ষেত্রে স্থানীয় চাঁদ দেখার পরিবর্তে বৈশ্বিক চাঁদ দেখা গুরুত্বপূর্ণ।

চট্টগ্রামের মির্জাখীল দরবার শরীফ, শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরীফ, চাঁদপুরের সাদ্রা দরবার শরীফ, ফরিদপুরের মির্জাখীল শরিফের মুরিদানরা, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, লালমনিরহাট, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই ধারা চলে আসছে বহু বছর ধরে। কেউ কেউ এটিকে হানাফি মাজহাবের ফতোয়া হিসেবে মানেন, আবার কেউ মনে করেন এটি দীর্ঘদিনের পারিবারিক ঐতিহ্য।

ঈদ উদযাপনের বৈচিত্র্য ও মতবিরোধ

বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটি সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদ উদযাপনের দিন ঘোষণা করে, যা দেশের অধিকাংশ মুসলমান পালন করেন। তবে কিছু বিশেষ দরবার ও সম্প্রদায় আগে থেকেই সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছেন।

এতে দেশে দুই দিনে ঈদ উদযাপনের প্রবণতা তৈরি হয়। কেউ এটিকে বৈচিত্র্য হিসেবে দেখেন, আবার কেউ একে অনৈক্যের প্রতিচ্ছবি বলে মনে করেন। তবে ধর্মীয়ভাবে এটি বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, কেননা ইসলামে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ পালনের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

সমাজ ও প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি

সরকারি নির্দেশনার বাইরে ঈদ উদযাপন কোনো অপরাধ নয়, তবে এটি সামাজিক বিভেদ তৈরি করতে পারে। আবার স্থানীয়ভাবে যারা সৌদি আরবের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন, তাদের কাছে এটি দীর্ঘদিনের প্রথা। তাই সরকার সাধারণত এসব বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয় না।

বাংলাদেশে আগাম ঈদ উদযাপনের প্রচলন কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, এটি ঐতিহাসিক এবং সামাজিক ঐতিহ্যের অংশ। এটি একদিকে যেমন ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ, অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে এক ধরনের বিভাজনও সৃষ্টি করে। ভবিষ্যতে এ নিয়ে আরও ধর্মীয় ও একাডেমিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে সমাজে কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ায়।

Leave a Reply