April 23, 2025
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি নিয়ে এগোবে এনসিপি

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি নিয়ে এগোবে এনসিপি

মার্চ ২৭, ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। তবে তারা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে নয়, বরং বিচারিক প্রক্রিয়ায় দলটিকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে। এর আগে এনসিপি সরাসরি দল নিষিদ্ধের দাবি তুললেও, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় দলটির নিবন্ধন বাতিলের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে তারা।

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি

এনসিপি মনে করে, বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে অন্তত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল হওয়া প্রয়োজন। এতে দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ কমে যাবে। দলটির নেতারা দৃঢ়ভাবে বলেছেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তারা কঠোর অবস্থানে থাকবে।

বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা

এনসিপির শীর্ষ নেতারা মনে করেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিচার হলে, আইনিভাবে দলটিকে নিষিদ্ধ করার পথ সুগম হবে। এই প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে, তবে এতে ভবিষ্যতে কোনো বিতর্কের সুযোগ থাকবে না।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, “এই মুহূর্তে এনসিপি আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে বিচারিক প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন ধাপ পার করে দলটিকে নিষিদ্ধের দিকেই আমাদের এগোতে হবে।”

সরকারের অবস্থান ও এনসিপির প্রতিক্রিয়া

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্ট করেছেন যে, সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। এই ঘোষণার পর এনসিপি তাদের কৌশল পরিবর্তন করে নিবন্ধন বাতিলের দাবিকে সামনে নিয়ে এসেছে। তারা মনে করছে, রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে অন্তত নিবন্ধন বাতিল করানো সম্ভব।

সেনাবাহিনী নিয়ে সতর্ক অবস্থান

সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের পর এনসিপির নেতারা এই বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। তারা সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে প্রচারণায় অংশ নেবে না, তবে রাজনীতির সামরিকীকরণের বিপক্ষে অবস্থান বজায় রাখবে।

এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমাদের অবস্থান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়। সেনাবাহিনীকে যারা অপব্যবহার করতে চায়, আমাদের অবস্থান তাদের বিরুদ্ধে।”

ঈদের পর পরিকল্পিত কর্মসূচি

ঈদুল ফিতরের পর এনসিপি আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। দলীয় সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবিকে সামনে রেখেই মাঠপর্যায়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এনসিপি বর্তমানে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগী, তবে তাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য দলটিকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করা। একই সঙ্গে, সেনাবাহিনীর বিষয়ে তারা কৌশলী অবস্থান বজায় রাখছে এবং রাজনৈতিক পুনর্বাসনের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সরব থাকছে। ঈদের পর এনসিপির কর্মসূচি রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নতুন মোড় দিতে পারে।

Leave a Reply