জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বাহাদুর শাহ পার্ক ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিলটি শেষ হয়।

বিক্ষোভ ও স্লোগান

মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও খুনি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধের দাবি জানান। তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন—

• “আওয়ামী লীগের রাজনীতি, বন্ধ করো করতে হবে”
• “ছাত্রলীগ বাংলাদেশ, একসাথে চলে না”
• “গড়িমশি বন্ধ করো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো”
• “চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার”

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার ক্ষত এখনও কাটেনি। আহতরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হলে তা শহিদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হবে।

শাখা ছাত্রঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, “জুলাই বিপ্লবে পাখির মতো গুলি করে যারা আমাদের ভাইদের শহীদ করেছে, তারা কীভাবে এ দেশে রাজনীতি করতে পারে? যতদিন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।”

শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “হাজার হাজার মায়ের কোল খালি করে নতুন বাংলাদেশে আমরা বসবাস করছি। আওয়ামী লীগের হাতে এখনও শত সহস্র শহীদের রক্ত লেগে আছে। আমরা আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেব না। ইন্টারিম সরকারকে সতর্ক করে দিতে চাই, যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয়, তবে তা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে।”

আন্দোলনের সূত্রপাত

এই বিক্ষোভের পেছনে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ-এর একটি ফেসবুক পোস্ট ভূমিকা রেখেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তার পোস্টের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি নতুন করে ওঠে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়তে পারে। আন্দোলনকারীরা স্পষ্টভাবে বলেছেন, যতদিন এই দল নিষিদ্ধ না হবে, ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এখন দেখার বিষয়, রাজনৈতিক মহল ও প্রশাসন এই দাবির বিষয়ে কী অবস্থান নেয়।