হামজা চৌধুরী কে, কেমন খেলেন, বাংলাদেশ দল কতটা উপকৃত হবে
বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ফুটবলার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে সুযোগ পেয়েছেন এবং ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে তার অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন।
হামজা চৌধুরীর জন্ম ও শিকড়
- জন্ম: ১৯৯৭ সালে, যুক্তরাজ্যের লেস্টারশায়ারে।
- পরিবার: তাঁর মা বাংলাদেশি, বাবা গ্রেনাডিয়ান। তবে তিনি বড় হয়েছেন সৎ বাবা মোরশেদ দেওয়ান চৌধুরীর ছায়ায়।
- বাংলাদেশের শিকড়: তাঁর পরিবারের বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবলে।
- ভাষাজ্ঞান: ছোটবেলা থেকেই বাংলা এবং বিশেষ করে সিলেটি ভাষায় দক্ষ।
ফুটবল ক্যারিয়ারের শুরু
- ৭ বছর বয়সে লেস্টার সিটি একাডেমিতে যোগ দেন।
- ২০১৬ সালে ধারে বার্টন আলবিয়নের হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয়।
- ২০১৭ সালে লেস্টার সিটির মূল দলে ফেরেন এবং লিগ কাপে লিভারপুলের বিপক্ষে অভিষেক করেন।
- ২০১৭ সালের নভেম্বরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক ঘটে টটেনহামের বিপক্ষে।
- ক্লাব ক্যারিয়ারে তিনি লেস্টার সিটি ছাড়াও ওয়াটফোর্ড ও শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেলেছেন (ধারে)।
ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা
- ২০১৮ সালে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে অভিষেক।
- ২০১৯ সালের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডের হয়ে ফ্রান্সের বিপক্ষে খেলেছেন।
- ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন ছিল, তবে সেটি পূরণ হয়নি।
হামজার খেলার ধরন ও দক্ষতা
- পজিশন: মূলত ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, তবে রাইট ব্যাক হিসেবেও খেলতে পারেন।
- কাজ: প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকানো, বল কন্ট্রোল করা, রক্ষণ সামলানো এবং মাঝমাঠ থেকে খেলা পরিচালনা করা।
- পরিসংখ্যান:
- পাসিং অ্যাকুরেসি: লেস্টারে ৮৯% এবং শেফিল্ডে ৮০%।
- ট্যাকল সাফল্য: ৬১%।
- গ্রাউন্ড ডুয়েল জয়: ৬৩%।
- এরিয়াল ডুয়েল জয়: ৪৭%।
- সাফল্য: ২০২১ সালে লেস্টার সিটির হয়ে এফএ কাপ জয়।
বাংলাদেশ জাতীয় দলে যোগদানের প্রক্রিয়া
- বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পেতে হলে মা-বাবার যেকোনো একজনের বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী হওয়া প্রয়োজন।
- ২০২৪ সালের আগস্টে তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট পান।
- ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ফিফার অনুমোদন মেলে।
- ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পান।
বাংলাদেশ দল কতটা উপকৃত হবে?
- রক্ষণভাগ সামলানোর দক্ষতা: বাংলাদেশের ফিফা র্যাঙ্কিং ১৮৫, যেখানে রক্ষণভাগের দুর্বলতা অন্যতম প্রধান সমস্যা। হামজার অন্তর্ভুক্তি সেই জায়গায় শক্তি জোগাবে।
- আন্তর্জাতিক মানের অভিজ্ঞতা: ইংল্যান্ডের মতো প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল কাঠামো থেকে আসা একজন ফুটবলার দলের খেলার মান উন্নত করতে পারেন।
- ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ: কোচ হাভিয়ের কাবরেরা জানিয়েছেন, অনুশীলনের পর হামজার সঠিক পজিশন নির্ধারণ করা হবে।
হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা একজন ফুটবলার দেশের জার্সিতে মাঠে নামা বাংলাদেশের ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এখন শুধু অপেক্ষা, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে তার অভিষেকের জন্য!
