
এআই চ্যাটবট ‘গ্রোক-৩’ নিয়ে ভারতের মোদি সরকারের বিপাকে পড়ার কারণ
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, যা হয়তো কল্পনাও করেনি। ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) চ্যাটবট ‘গ্রোক-৩’ বিভিন্ন প্রশ্নের এমন তথ্যনির্ভর উত্তর দিচ্ছে, যা বিজেপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রচারিত বয়ানের সঙ্গে মিলছে না। বরং এর উত্তরগুলো তাদের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রোক-৩ কীভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে?
‘গ্রোক-৩’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এর (সাবেক টুইটার) মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে, যা বিজেপি ও আরএসএসের প্রচারিত ইতিহাস ও বয়ানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিতর্কিত কিছু উত্তর:
- সোনিয়া গান্ধী সম্পর্কে:
- দাবি: তিনি ‘বার ডান্সার’ ছিলেন।
- গ্রোকের উত্তর: তিনি বার অ্যাটেন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করতেন, ডান্সার ছিলেন না।
- নরেন্দ্র মোদির ‘অনুপ্রবেশকারী’ মন্তব্য:
- গ্রোকের বিশ্লেষণ: এটি তিনি ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’ উসকে দিতে বলেছেন।
- বিনায়ক সাভারকরের ভূমিকা:
- ব্রিটিশদের কাছে সবচেয়ে বেশিবার ক্ষমা চাওয়া ও মাসে ৬০ টাকা পেনশন নেওয়ার প্রসঙ্গে বিনায়ক দামোদর সাভারকরের নাম উঠে এসেছে।
- আরএসএসের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা:
- গ্রোকের উত্তর: ‘ন্যূনতম বা শূন্য’। কিছু ব্যক্তি স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দিলেও সংগঠন হিসেবে আরএসএসের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল না।
মোদি সরকারের প্রতিক্রিয়া ও চ্যালেঞ্জ
- বিজেপি ও আরএসএসপন্থীরা ‘গ্রোক-৩’ নিয়ন্ত্রণের দাবি তুললেও এটি সহজ নয়।
- কারণ, এটি পরিচালনা করছেন মার্কিন ধনকুবের ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজন ইলন মাস্ক।
- কোনো বিদেশি প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে।
এআই-চালিত তথ্যভিত্তিক চ্যাটবট ‘গ্রোক-৩’ মোদি সরকার ও কট্টরপন্থি সংগঠনগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সরকার চাইলেও এটি সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, কারণ এটি একটি আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর ফলে তথ্যের ওপর সরকারের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।