April 25, 2025
ভারতে হোলি উৎসবে মুসলিমদের নির্যাতনের ঘটনায় ইসলামী আন্দোলনের উদ্বেগ

ভারতে হোলি উৎসবে মুসলিমদের নির্যাতনের ঘটনায় ইসলামী আন্দোলনের উদ্বেগ

মার্চ ১৮, ২০২৫

ভারতে হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টি ধর্মীয় ও মানবাধিকার প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। দলটির মহাসচিব ইউনুছ আহমাদের বিবৃতিতে মূলত বিজেপি শাসনাধীন ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা বৃদ্ধির প্রবণতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার সংকটকে তুলে ধরা হয়েছে।

ধর্মীয় সহিংসতার প্রেক্ষাপট

ভারতে মুসলমানদের ওপর সহিংসতা নতুন কিছু নয়, তবে সাম্প্রতিক সময়ে এটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। রাজনৈতিকভাবে উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোর আধিপত্য বৃদ্ধি, রাষ্ট্রীয় নীতিতে সাম্প্রদায়িক প্রভাব এবং প্রশাসনের নীরবতা—এসব বিষয় মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নামাজরত মুসলমানদের ওপর হামলা, ধর্মীয় উৎসবে তাদের ওপর সহিংসতা চালানো এবং সামগ্রিকভাবে মুসলমানদের নাগরিক অধিকার খর্ব করার বিষয়টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতে, ভারতের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই শ্রেয়। বিবৃতিতে বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতির সমালোচনা করে বলা হয়েছে, ধর্মকে সহিংসতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা হিন্দু ধর্মীয় নীতিতেও সমর্থনযোগ্য নয়। তারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ তুলে ধরে দেখিয়েছে, কিভাবে বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান মিলে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রেখে পারস্পরিক ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সম্মান জানাচ্ছে।

রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব

ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর এই ধরনের সহিংসতা শুধু ধর্মীয় স্বাধীনতাকেই ব্যাহত করছে না, বরং এটি সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকিস্বরূপ। ভারতের বহুত্ববাদী চরিত্রকে নস্যাৎ করার চেষ্টা শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের মধ্যে একটি বৃহত্তর বার্তা নিহিত রয়েছে—যা হলো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অভাব কোনো জাতির দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না।

ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতন একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিজেপি সরকার যদি এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে প্রশ্রয় দিতে থাকে, তাহলে এটি কেবল ভারতীয় সমাজের ঐক্যকেই দুর্বল করবে না, বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভারতের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হবে। তাই মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করা শুধুমাত্র মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং ভারতের স্থিতিশীলতার জন্যও অপরিহার্য।

Leave a Reply