
দোহারে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান এক রায়ে দোহারে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে জিয়াউর রহমান নামের এক আসামির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে তাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায়ের সময় আসামি পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
ঘটনার বিশদ বিবরণ
২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে দোহারের এক ১৪ বছর বয়সী কিশোরী নিজ বাড়ির পাশে সবজির খেতে গেলে আসামি জিয়াউর রহমান তাঁকে পাশের একটি খেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি চাকু দিয়ে কিশোরীর গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান।
নিহত কিশোরীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১২ মার্চ পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। বিচার প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৮ জন সাক্ষী উপস্থাপন করা হয়।
বিচার বিশ্লেষণ
এই রায় দেশের বিচারব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত, যা নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কঠোর মনোভাবের প্রকাশ ঘটায়।
বিচারিক প্রক্রিয়ার ইতিবাচক দিকসমূহ:
- দ্রুত তদন্ত ও অভিযোগপত্র দাখিল: ২০১৮ সালে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর এক বছরের মধ্যেই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়, যা বিচার ব্যবস্থার সক্রিয়তার পরিচয় দেয়।
- ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদান: মামলাটি ন্যায়বিচারের স্বার্থে শক্তিশালী সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে।
- মৃত্যুদণ্ডের রায়: নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো গুরুতর অপরাধে কঠোর শাস্তির নজির স্থাপিত হলো, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখতে পারে।
চ্যালেঞ্জ ও সমাধান:
- আসামি পলাতক: রায়ের সময় আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া বিচার প্রক্রিয়ায় বড় বাধা।
- সমাধান: দ্রুত গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে শাস্তি কার্যকর করা।
- বিচার দীর্ঘসূত্রিতা: অপরাধের প্রায় ছয় বছর পর রায় দেওয়া হয়েছে, যা বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতার দিকটি তুলে ধরে।
- সমাধান: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আরও গতিশীল করা।
- সাক্ষী ও ভুক্তভোগীর পরিবারের নিরাপত্তা: উচ্চ প্রোফাইল মামলাগুলোর ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী পরিবার ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
- সমাধান: রাষ্ট্রীয়ভাবে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।