
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত ৩১, আহত শতাধিক
ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে, এছাড়া আহত হয়েছেন ১০১ জনের বেশি।
হুতিদের বিরুদ্ধে কেন হামলা?
মূলত, গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে হুতিদের হুমকির পরই যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হামলা চালায়। হুতিরা দীর্ঘদিন ধরে লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজ এবং যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত নৌবহরকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছে।
রোববার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
হুতিদের প্রতিক্রিয়া
হুতি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আল-আসবাহি জানিয়েছেন, এই হামলা স্বাধীন একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্পষ্ট আগ্রাসন। তিনি বলেন,
“নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ইয়েমেনের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ।”
হুতিদের এক মুখপাত্র বলেছেন,
“এই হামলা ইসরায়েলকে গাজার ওপর অন্যায়ভাবে অবরোধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে।”
ট্রাম্পের কঠোর হুঁশিয়ারি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুতিদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন,
“লোহিত সাগরের জাহাজগুলোতে যদি আরেকটি হামলা হয়, তবে ‘নরক নেমে আসবে’!”
ট্রাম্প দাবি করেছেন, হুতিরা আন্তর্জাতিক নৌ-পরিবহন এবং বাণিজ্যের জন্য হুমকি।
হুতিদের পাল্টা বক্তব্য
হুতিরা বলছে,
- তারা শুধু ইসরায়েলি নৌ-পরিবহন লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে—এটি আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের জন্য হুমকি নয়।
- গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে তারা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে।
- লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক নৌ-পরিবহন নিরাপদ থাকবে, তবে মার্কিন অভিযান এই অঞ্চলকে সামরিকীকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?
- যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।
- ইরান হুতিদের অন্যতম প্রধান মিত্র, ফলে এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
- হুতিরা নতুন করে পাল্টা হামলার পরিকল্পনা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান শুধু হুতিদের বিরুদ্ধে নয়, এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, এবং ইসরায়েলের মধ্যে নতুন উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই সংঘাত কূটনৈতিকভাবে সমাধান হবে নাকি সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়বে।