
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ, তীব্র হচ্ছে বাণিজ্যযুদ্ধ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং কানাডা পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পাল্টা শুল্কের মুখে ট্রাম্পও আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্পের অবস্থান
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন,
“তারা আমাদের দিকে যা ছুড়বে, আমরা তা-ই ফেরত দেব।”
তিনি আগামী মাসে বিভিন্ন দেশের ওপর নতুন পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।
ইইউর প্রতিক্রিয়া ও পাল্টা ব্যবস্থা
ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে ইইউ ২৬ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২৮.৩ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
- ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে মার্কিন পণ্যের ওপর চলমান শুল্ক স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করবে।
- এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ নতুন পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেছেন,
“আমরা অর্থবহ সংলাপে অংশ নিতে প্রস্তুত। বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফচোভিচকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করে আরও ভালো সমাধান খুঁজে বের করার দায়িত্ব দিয়েছি।”
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও জনমত
ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে।
- রয়টার্স ও ইপসোস পরিচালিত এক জরিপ অনুসারে, ৫৭% মার্কিনি মনে করেন ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বাণিজ্যযুদ্ধের কারণ হতে পারে।
- বাণিজ্যনীতির অস্থিরতার ফলে মার্কিন আর্থিক বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
- ট্রাম্পের নীতিকে অনেকেই “খামখেয়ালি” মনে করছেন, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
অভিবাসন সংকট ও আইসের বক্তব্য
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির কঠোর অবস্থানও সমালোচনার মুখে পড়েছে।
- মার্কিন অভিবাসী আটককেন্দ্রগুলো ধারণক্ষমতার চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে।
- আইস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে ৪৭,৬০০ জন অভিবাসী আটক অবস্থায় রয়েছে।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বিশ্ববাণিজ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যা অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি তৈরি করছে। ইইউসহ অন্যান্য দেশ পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ায় বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারে। একই সঙ্গে অভিবাসন সংকটসহ অভ্যন্তরীণ নীতিগত চ্যালেঞ্জগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য নতুন সমস্যা তৈরি করছে। এখন দেখার বিষয়, সংলাপের মাধ্যমে কোনো সমাধান আসবে নাকি বাণিজ্যযুদ্ধ আরও বিস্তৃত হবে।