
নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত ক্ষতিগ্রস্ত হবে: আমির খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বক্তব্যে নির্বাচন বিলম্বের নেতিবাচক প্রভাব, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা, জনগণের সমর্থনসম্পন্ন সরকার গঠনের গুরুত্ব এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে।
১. নির্বাচন বিলম্ব ও এর প্রভাব
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতন্ত্র ও শান্তি-শৃঙ্খলা ব্যাহত হবে।” এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, একটি গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া দেশ সুশাসন ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারবে না। বর্তমান প্রশাসনকে তিনি অগণতান্ত্রিক হিসেবে উল্লেখ করে দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
২. জনগণের সমর্থন ও জবাবদিহিমূলক সরকার
তিনি মনে করেন, জনগণের সমর্থন ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকারি কর্মকর্তারা কার্যকরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবে না। সুতরাং, “জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার”ই দেশের সমস্যা সমাধানে সক্ষম। এ বক্তব্য মূলত বর্তমান সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি নতুন নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা।
৩. নির্বাচনের সময়সীমা ও প্রস্তুতি
তিনি দাবি করেন, নির্বাচন জুন মাসের মধ্যেও সম্ভব এবং নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত রয়েছে। তবে সরকারকে এ বিষয়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখাতে হবে। তার বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতার প্রশ্নে কিছুটা আস্থা প্রকাশ পেলেও মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সরকারের ওপরই ন্যস্ত বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
৪. দেশি-বিদেশি স্টেকহোল্ডারদের ভূমিকা
বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেছেন, শুধু দেশের জনগণই নয়, আন্তর্জাতিক মহলও একটি গণতান্ত্রিক সরকারের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রয়োজন।
৫. রাজনৈতিক বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ
তার বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চাইলেও মূল চ্যালেঞ্জ সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছা (Political Will)। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সরকার তাদের মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়, ফলে সময়মতো নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে।
আমির খসরুর বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক সংকট ও এর সমাধানের উপায় নিয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। তিনি নির্বাচনকে দ্রুততর করার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে গণতন্ত্র, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনার গতি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তবে, বাস্তবে এটি নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্ত, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের ওপর।