
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু হলের নাম পরিবর্তন: নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে শিক্ষার্থীরা হাতুড়ি দিয়ে নাম তুলে ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল’ নামকরণ করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ও অমর একুশে হলের ফলক থেকে শেখ হাসিনার নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ
- বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম মুছে নতুন নাম লিখে দেন।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুটি হলে শেখ হাসিনার নাম মুছে ফেলা হয়।
- এসব ঘটনার পটভূমিতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটে।
- রাত ১১টার দিকে এক্সকাভেটর ও ক্রেন এনে ধানমন্ডি ৩২-এর বাড়ি ভাঙা শুরু হয়, যা আজ সকাল পর্যন্ত চলতে থাকে।
রাজনৈতিক পটভূমি
এই ঘটনাগুলোর মূল কারণ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ফেসবুক ভাষণ।
- শেখ হাসিনার ভাষণ প্রচারকে কেন্দ্র করে বুধবার সন্ধ্যার পর রাজধানীজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়।
- রাত আটটার আগেই বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২-এ জড়ো হন।
- একপর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়।
- রাত ১১টার দিকে ক্রেন ও এক্সকাভেটর এনে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একই সময়ে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে নতুন নামকরণ করেন।
রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
- প্রতীকী বিদ্রোহ: বঙ্গবন্ধু হলের নাম পরিবর্তন শুধু একটি নাম পরিবর্তন নয়, বরং এটি প্রতীকী বিদ্রোহ, যা আওয়ামী লীগের প্রতীকী অবসানের প্রতিফলন।
- নজরুলকে সামনে আনা: নতুন নাম জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল—এটি শুধুমাত্র পরিবর্তন নয়, বরং জাতীয়তাবাদ ও বিদ্রোহী চেতনাকে সামনে আনার ইঙ্গিত।
- শেখ হাসিনার নাম মুছে ফেলা: এটি গণ-অভ্যুত্থানে তার জনপ্রিয়তা পুরোপুরি ধসে পড়ার আরেকটি প্রমাণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নাম পরিবর্তনের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক চেতনার বড় ধরনের রূপান্তরের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি শুধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের প্রতি আঘাত নয়, বরং নতুন রাজনৈতিক ধারার উত্থানের প্রতিচ্ছবি।
বাংলাদেশ এখন এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করছে, যেখানে পুরোনো প্রতীকগুলোর স্থান ধীরে ধীরে নতুন প্রতীকে পরিবর্তিত হচ্ছে।