July 19, 2025
বিপিএলে দুর্নীতির অভিযোগ: দেশ ছাড়ায় নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জনে এনামুল হক বিজয়

বিপিএলে দুর্নীতির অভিযোগ: দেশ ছাড়ায় নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জনে এনামুল হক বিজয়

ফেব্রু ২, ২০২৫

বিপিএল চলাকালে ম্যাচ গড়াপেটার সন্দেহে এনামুল হক বিজয়ের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে— এমন খবর সকালেই প্রকাশ পায় গণমাধ্যমে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তারা এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জন ও বিসিবির প্রতিক্রিয়া

শনিবার বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের (এসিইউ) এক কর্মকর্তা নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, “আমি অনুরোধ করব, সন্দেহভাজন তালিকায় যাদের নাম এসেছে, তদন্তের মুখোমুখি না হয়ে তারা যেন দেশ ছাড়তে না পারে।”

এমন পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। একাধিক গণমাধ্যমে খবর আসে, এনামুল হক বিজয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের চাপে এসিইউ কর্মকর্তা স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলেন বলে জানা গেছে।

এনামুল হক বিজয় এ ধরনের সংবাদ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং বিসিবির একাধিক পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি স্পষ্ট করার অনুরোধ জানান। এরপর বিসিবি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়—

“এনামুল হক বিজয়ের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত বিসিবি নেয়নি। এমন কোনো আদেশের ব্যাপারে আমরা কোনো সংস্থা থেকে নোটিশও পাইনি।”

বিপিএলে দুর্নীতি নিয়ে বিসিবির তদন্ত

বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ মনে করছে, বিপিএলের বেশ কিছু ম্যাচ সন্দেহজনক। বিশেষ করে,

  • লাগামহীন নো ও ওয়াইড বল করা
  • কিছু নির্দিষ্ট বোলার ও ব্যাটসম্যানের পারফরম্যান্স

এসব বিষয় সন্দেহজনক হওয়ায় বিসিবির এসিইউ বিভাগ কয়েকজন ক্রিকেটারের নাম বোর্ডের কাছে জমা দিয়েছে। এর মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে নাকি তথ্য-প্রমাণও রয়েছে, যা বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলকে জানানো হয়েছে।

এসিইউ-এর এক কর্মকর্তা বলেন,

“বিপিএলের শুরুতে আমরা যে তথ্য-প্রমাণ দিয়েছি, সেগুলো আমলে নিলে বিজয় চট্টগ্রাম পর্বে ম্যাচ খেলতে পারবে না।”

বিপিএলের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক

সাধারণত আইসিসির দুর্নীতি দমন নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ক্রিকেটারের কার্যক্রম সন্দেহজনক হলে গোপনে তদন্ত করা হয়। যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে তারপর সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

কিন্তু বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ সেই পদ্ধতি অনুসরণ না করে গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করেছে। বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

জাতীয় দলের এক সাবেক ক্রিকেটার বলেন—

“ওয়াইড বা নো বল মানেই ফিক্সিং নয়। বিসিবির উচিত ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কাউকে ট্রেনিং দিয়ে দুর্নীতি দমন বিভাগে নিয়োগ দেওয়া। এতে সঠিক চিত্র উঠে আসবে।”

বিপিএল নিয়ে ক্রিকেটারদের উদ্বেগ

এসিইউ কর্মকর্তাদের অভিযোগের ধরন ও সন্দেহ প্রকাশের পদ্ধতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ক্রিকেটাররা। তারা কোয়াবের (ক্রিকেটারদের সংগঠন) কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

এরই মধ্যে জানা গেছে, সিলেট পর্বের সময় দুর্বার রাজশাহীর অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ও ম্যানেজার মেহরাব হোসেন অপির সঙ্গে বিসিবির কিছু কর্মকর্তার আলাদা আলোচনা হয়েছে। তবে সেটি ফিক্সিং সংক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় পুরো বিপিএলে দুর্নীতি দমন কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিসিবি অবশ্য জানিয়েছে, তারা বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Leave a Reply