
আগারগাঁওয়ে সড়কে অবস্থান, গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের বিক্ষোভ
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা। রোববার সকালে রাজস্ব ভবন থেকে টিবি হাসপাতালের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে তাঁরা যান চলাচল বন্ধ করে দেন।
বিক্ষোভের পটভূমি ও দাবিসমূহ
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকেই জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে তাঁরা অবস্থান নেন। আহতদের অভিযোগ, সরকার তিন মাস আগে সুচিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। চিকিৎসা ব্যবস্থা ধীরগতির এবং যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় তাঁরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
আহতদের অবস্থা ও অভিযোগ
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ এক চোখে, কেউ দুই চোখে আঘাত পেয়েছেন, আবার কেউ হাত বা শরীরের অন্য অংশে গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁরা বলছেন, হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে শুধু ড্রপ বা ব্যথার ওষুধ দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আন্দোলনকারী কবির হোসেন, যিনি আন্দোলনের সময় চোখে গুলি লেগে আহত হন, জানান, হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় তাঁর অবস্থার অবনতি হচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন মো. দুলাল, যিনি হাতে আঘাত পেয়েছিলেন এবং এখনো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাননি।
বিক্ষোভের কারণে জনদুর্ভোগ
রাস্তায় চাদর বিছিয়ে শুয়ে থাকা, বেঞ্চ পেতে বসে থাকার কারণে আগারগাঁওয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষত ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনের রাস্তা বন্ধ থাকায় রোগী ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। যদিও অ্যাম্বুলেন্স ও গুরুতর রোগীদের জন্য রাস্তা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, তবুও আশপাশের এলাকায় যানজট দেখা দিয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁদের আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল, কিন্তু এখন সরকারের কেউ তাঁদের খোঁজ নেন না। তাঁরা সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং তাঁদের ভূমিকার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত সরকারের কোনো প্রতিনিধি তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আসেননি।
উপসংহার
আহতদের দাবি ন্যায়সংগত হলেও রাস্তা অবরোধ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করা সমস্যার সমাধান নয়। সরকারকে দ্রুত তাদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে আহত ব্যক্তিরা সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। একই সঙ্গে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির বিষয়টিও নীতিনির্ধারকদের গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।