
যুক্তরাষ্ট্রে এবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিধ্বস্ত, ৬ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক সময়ে পরপর দুটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা দেশের এভিয়েশন সেক্টরে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ও মার্কিন সেনাবাহিনীর ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ফিলাডেলফিয়ার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনা
৩১ জানুয়ারি স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় উত্তর-পূর্ব ফিলাডেলফিয়ার রুজভেল্ট বুলেভার্ড এলাকায় একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিধ্বস্ত হয়। জেট রেসকিউ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পরিচালিত লিয়ারজেট ৫৫ মডেলের উড়োজাহাজটিতে চারজন ক্রু, একজন শিশুসহ মোট ছয়জন ছিলেন। উড্ডয়নের পর মাত্র ১,৬৫০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পরপরই এটি দ্রুত নিচে নামতে থাকে এবং প্রতি মিনিটে ১১,০০০ ফুট হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর বিমানটি বিস্ফোরিত হয়ে বিশাল আগুনের গোলায় পরিণত হয়, যা আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।
প্রতিক্রিয়া ও উদ্ধার কার্যক্রম
বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল। দুর্ঘটনার পরপরই ফিলাডেলফিয়া প্রশাসন ঘটনাস্থলে জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। ফিলাডেলফিয়ার মেয়র চেরেল পার্কার একে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছেন এবং গভর্নর জোশ শাপিরো জানান, রাজ্যের সকল সংস্থা ঘটনাস্থলে সহায়তা করছে। দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়।
ওয়াশিংটন ডিসির দুর্ঘটনা ও সামগ্রিক প্রভাব
ফিলাডেলফিয়ার দুর্ঘটনার কয়েকদিন আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ও মার্কিন সেনাবাহিনীর ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে ৬৭ জন নিহত হয়। ২০০৯ সালের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ করণীয়
দুইটি বড় ধরনের বিমান দুর্ঘটনা পরপর ঘটায় মার্কিন বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, ফ্লাইট মনিটরিং এবং বিমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনাগুলো দেশটির এভিয়েশন নিরাপত্তার জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে। নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো কঠিন হবে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কী ধরনের পদক্ষেপ নেয় যাতে এ ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।