
‘অন্ধকারের গান’: প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির অমিল
পরিচালক: ভিকি জাহেদ
ধরন: থ্রিলার, ড্রামা
স্ট্রিমিং: বিঞ্জ
অভিনয়ে: মোশাররফ করিম, জাকিয়া বারী মম, শাহনাজ সুমি, রাশেদ মামুন অপু, আবুল হায়াত।
গল্পের সারসংক্ষেপ
‘অন্ধকারের গান’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র মুকুল (মোশাররফ করিম), শহরের এক বাড়ির কেয়ারটেকার। রুমালী (জাকিয়া বারী মম) এক গ্রামের গৃহবধূ, যার স্বামী শহরে কাজ করলেও হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। স্বামীর খোঁজে রুমালী শহরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে, গার্মেন্টসকর্মী শাপলা (শাহনাজ সুমি) নিজের পরিবারকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও হঠাৎই মুকুলের দৃষ্টি তার দিকে যায়। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সবাই জড়িয়ে পড়ে এক অন্ধকার বাস্তবতায়।
প্রত্যাশা বনাম বাস্তবতা
ট্রেলার রহস্য ও রোমাঞ্চের ইঙ্গিত দিলেও মুক্তির পর সিনেমাটি সে মান বজায় রাখতে পারেনি। ভিকি জাহেদ ডার্ক থ্রিলারের জন্য পরিচিত হলেও এখানে তার স্বতন্ত্র রোমাঞ্চের স্বাদ অনুপস্থিত। সিনেমাটি থ্রিলারের জায়গায় এক সাধারণ পারিবারিক নাটকে রূপ নিয়েছে, যার আবেগের গভীরতাও যথেষ্ট নয়।
চিত্রনাট্যের দুর্বলতা স্পষ্ট—গল্পের বাঁকগুলো অনুমানযোগ্য এবং চরিত্রগুলোর বিকাশ ততটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। সিনেমার শেষদিকে একটি চমক থাকলেও তা পুরো গল্পের দুর্বলতা ঢাকতে ব্যর্থ।
অভিনয় ও চরিত্রায়ণ
সিনেমাটির অন্যতম শক্তিশালী দিক অভিনয়, বিশেষ করে মোশাররফ করিম। তিনি তার চরিত্র মুকুলকে যথাযথভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যদিও চিত্রনাট্যের সীমাবদ্ধতার কারণে চরিত্রটি আরও গভীর হতে পারত।
মম ও সুমি স্বল্প উপস্থিতিতেও নিজেদের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, তবে সুমির চরিত্রের পরিণতি সহজেই অনুমান করা যায়। রাশেদ মামুন অপু আবারও নেতিবাচক চরিত্রে, তবে চরিত্রটি যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না। আবুল হায়াতের চরিত্রও গল্পে তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেনি।
চূড়ান্ত মূল্যায়ন
‘অন্ধকারের গান’ প্রত্যাশিত থ্রিলার হয়ে উঠতে পারেনি। এটি থ্রিলারের চেয়ে বেশি এক সাধারণ পারিবারিক গল্প, যেখানে আবেগ থাকলেও তা হৃদয়ে দাগ কাটতে ব্যর্থ। ভালো অভিনয়ও দুর্বল চিত্রনাট্যের ভার বহন করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এটি ভিকি জাহেদের আগের কাজগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম প্রভাবশালী একটি ওয়েব ফিল্ম হয়ে রয়ে গেছে।