ক্ষমতায় এসেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি নেতানিয়াহুকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানালেন ট্রাম্প
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্পের আমন্ত্রণে প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে হোয়াইট হাউস সফর করবেন তিনি।
আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও ট্রাম্পের আমন্ত্রণ
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইতোমধ্যে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবু ট্রাম্প তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ইসরায়েলের প্রতি তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আইসিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ২০ মে পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই অপরাধের মধ্যে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তবে ইসরায়েল এই পরোয়ানাকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে নিন্দা জানিয়েছে এবং নেতানিয়াহু এই পরোয়ানাকে উপেক্ষা করেই ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন।
গাজা যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সংকট
বর্তমানে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ছয় সপ্তাহের একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চলছে। ১৫ মাসের সংঘাতের পর এ যুদ্ধবিরতিতে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে।
- ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৪৭,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য।
- হামাসের হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫০ জন জিম্মি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
- যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, হামাস ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে, আর ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে।
গাজা খালি করার বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থান
ট্রাম্প চান, গাজার ফিলিস্তিনিদের মিসর আশ্রয় দিক। তিনি সম্প্রতি বলেন, ‘আমি আশা করি, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি গাজার কিছু মানুষকে গ্রহণ করবেন।’ তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, মিসর যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সাহায্য পায়, তাই তাদেরও সহায়তা করা উচিত।
তবে মিসর, জর্ডান ও অন্যান্য আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিপক্ষে। কারণ এটি এমন এক ভূখণ্ড, যেটিকে ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যতের রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়।
নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফর ও ট্রাম্পের সমর্থন যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতাকে আরও দৃঢ় করেছে। তবে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, গাজায় চলমান সংকট ও ট্রাম্পের বিতর্কিত বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কূটনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
