
গাছ কাটার আগে অনুমতি নিতে হবে: হাইকোর্টের রায়
গাছ কাটার আগে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর দায়ের করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
রায়ের মূল বিষয়বস্তু:
- কর্তৃপক্ষ গঠন ও অনুমতি প্রক্রিয়া
- পরিবেশ অধিদপ্তরকে সাত দিনের মধ্যে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- কমিটিতে পরিবেশবাদী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
- জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গাছ কাটার অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- সামাজিক বনায়ন প্রকল্পে পরিবর্তন
- সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪-এর অধীনে রোপণকৃত গাছ কাটা যাবে না।
- বনায়নকারীদের গাছের মূল্যের সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
- পরিবেশ রক্ষা ও ভারসাম্য
- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
- তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
রুল জারি এবং প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপট:
২০২৪ সালের ৫ মে এইচআরপিবি রিট আবেদন দায়ের করে। এতে ঢাকাসহ সারাদেশে গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণ এবং অনুমতির জন্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়। ৭ মে আদালত রুল জারি করে গাছ কাটার অনুমতি কেন ৭ সদস্যের কমিটি থেকে নেওয়া হবে না তা জানতে চান।
শুনানি ও রায়:
- শুনানিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ পরিবেশ সুরক্ষার জন্য গাছ কাটার মাত্রা কমানো এবং বনায়নের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
- আদালত এই যুক্তি মেনে নিয়ে রুল মঞ্জুর করে।
রায়ের নির্দেশনা:
- পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গঠিত কমিটি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।
- পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে সামাজিক বনায়নের অধীনে রোপণকৃত গাছ সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।
প্রভাব:
এই রায় পরিবেশ সুরক্ষা এবং গাছ কাটার অনিয়ম বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি দেশের তাপমাত্রা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে।