
ঢাবি ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকায় ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়েছে, তা খুবই উত্তেজনাপূর্ণ এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এই সংঘর্ষের পেছনে যে মূল কারণগুলো রয়েছে, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা দরকার।
প্রথমত, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের বিরুদ্ধে ‘বিরূপ আচরণের’ অভিযোগ তুলেছে, এবং তাদের দাবি ছিল যে তিনি তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। তারা তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তর না পাওয়ার ফলে তাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এই বিষয়টি প্রথমে একটি প্রশাসনিক সমস্যা মনে হলেও, তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি বড় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
এই আন্দোলন, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকায় শুরু হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা এবং সংঘর্ষের রূপ নেয়। এর ফলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা একদিকে অবস্থান নিয়েছিল, অন্যদিকে ঢাবির এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা তাদের ঠেকাতে অবস্থান নেয়। এই ধরনের উত্তেজনা ও সংঘর্ষ সাধারণত আরও বৃহত্তর প্রতিবাদের আকার নিতে পারে, যা শিক্ষাব্যবস্থার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
দ্বিতীয়ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদকে ঠেকানোর চেষ্টা ছিল। এর ফলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শত্রুতা এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার আকার ধারণ করে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ধরনের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর বিপদ তৈরি করে। শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলন অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে, তবে সহিংসতার মাধ্যমে প্রতিবাদ করা কখনোই ফলপ্রসূ হতে পারে না। এই ধরনের সংঘর্ষ শিক্ষার পরিবেশে স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করে এবং দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার্থীদের মানসিক শান্তি ও মনোযোগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। প্রশাসনকে আরও কার্যকরভাবে শিক্ষার্থীদের দাবি শুনতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ এবং গঠনমূলক আলোচনা শুরু করতে হবে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদেরও তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য সচেতন হতে হবে, যাতে সংঘর্ষের মাধ্যমে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয় এবং তাদের দাবি সঠিকভাবে প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা যায়।