
ইবতেদায়ি শিক্ষকদের মিছিলে হামলা শিক্ষকসমাজকে অপমান: জাতীয় শিক্ষক ফোরাম
ইবতেদায়ি শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চলাকালীন পুলিশি হামলার ঘটনাটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এবং শিক্ষকসমাজে গভীর ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে। জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কর্তৃক এই হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদের মাধ্যমে এটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের উপর পুলিশের আক্রমণ শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি সরকারের অবহেলা এবং শিক্ষকদের মৌলিক অধিকার ভঙ্গের ইঙ্গিত দেয়।
এ ধরনের পুলিশি সহিংসতা, যেখানে কাঁদানে গ্যাস, জলকামান এবং লাঠিপেটার মতো অত্যাচারের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, তা শুধু আন্দোলনকারীদের জন্য অপমানজনক নয়, বরং গোটা শিক্ষকসমাজের প্রতি অসম্মান ও অবমূল্যায়ন হিসেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষকরা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, এবং তাদের এই ধরনের অশোভন আচরণ মোকাবেলা করার পরিবর্তে সরকার যদি একে ‘ন্যক্কারজনক’ হিসেবে চিহ্নিত না করে, তবে তা শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে।
বিবৃতিতে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দ যে দাবি তুলেছেন, তা খুবই যৌক্তিক। ২০১৩ সালে হাসিনা সরকারের অধীনে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হলেও ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের সেই একই অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। তাদের প্রায় ৪০ বছরের বৈষম্য দূর করার জন্য সরকারের তরফ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু বাস্তবতায় সেই সমাধান না পাওয়ায় শিক্ষকেরা আন্দোলনে নেমেছেন।
এছাড়া, ২০ জানুয়ারি থেকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চললেও কোনো সরকারী প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করা হয়নি, যা তাদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি যখন শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে, তখন পুলিশের হামলার ঘটনা এবং নারী শিক্ষককে সহিংসতার শিকার হওয়া, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এই ঘটনা থেকে সরকারের উচিত হবে, ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জাতীয়করণ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা এবং শিক্ষকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা। এছাড়া, পুলিশি সহিংসতার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিত, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
জাতীয় শিক্ষক ফোরামের মতো সংগঠনগুলোর দাবি, সরকারের কাছ থেকে কার্যকর ও দ্রুত পদক্ষেপ আশা করে, যাতে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান ফিরে আসে এবং তারা তাঁদের ন্যায্য অধিকার অর্জন করতে পারেন।