
দাবাড়ুদের মধ্যে অসন্তোষ
জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ফলাফল বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের জন্য মূল নির্বাচনী মানদণ্ড হওয়ায় কিছু দাবাড়ুদের মধ্যে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালে জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতা না হওয়ায়, ২০২৪ সালের জন্য এই প্রতিযোগিতার ফলাফল বিশ্ব দাবায় অংশগ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন দাবাড়ু, যারা ইতোমধ্যে দাবা অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেছেন, তারা মনে করছেন যে, তাদের জন্যও বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ তৈরি করা উচিত।
বিতর্কের মূল বিষয়
জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ফলাফলের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দাবা বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ দেওয়ার জন্য দাবাড়ুরা চান, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের মাধ্যমে নতুন করে খেলোয়াড় নির্বাচন করা হোক। কারণ, কিছু দাবাড়ু, যারা ইতোমধ্যে দাবা অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের জন্য বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ ন্যায্য মনে হচ্ছে না।
তাদের দাবি, বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের জন্য তাদের যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা উচিত। এটি এমন একটি প্রতিযোগিতা হবে, যেখানে নতুন এবং পূর্বে অলিম্পিয়াডে খেলা খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে এবং এতে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ফেডারেশনের ভূমিকা এবং সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। সাধারণ সম্পাদক ড. মো. তৈয়বুর রহমান জানিয়েছেন যে, বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের আগে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। মূলত, ২০২৫ সালে ভারতের দিল্লিতে ফিদে দাবা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণের জন্য মনন রেজা নীড়কে প্রস্তুত করা হচ্ছে, যিনি গত বছর জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন। তবে, ফেডারেশন মনে করছে, দাবা বিশ্বকাপের সময়সীমা পরিবর্তিত হওয়ার ফলে, জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন এখন আর সম্ভব হয়েছে, এবং এই টুর্নামেন্টটি আয়োজন করে সকল খেলোয়াড়ের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
তাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে, যারা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তাদেরও জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের সুযোগ মিলবে। ড. তৈয়বুর রহমান আরও জানান, “এটা স্বাভাবিক ব্যাপার, যে খেলোয়াড় জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হবে, সেই খেলবে বিশ্বকাপে।”
দাবাড়ুদের প্রতিক্রিয়া
তবে, দাবাড়ুদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি রয়েছে। তাদের মতে, বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণের জন্য সঠিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া থাকা উচিত। তারা মনে করেন, যদি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন পদ্ধতি হয়, তবে এটি আরও সুবিচারের ভিত্তিতে হতে পারে। বিশেষ করে, যেসব খেলোয়াড় ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক আসরে খেলার সুযোগ পেয়েছেন, তাদের জন্য একটি নতুন নির্বাচনী পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা উচিত, যাতে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়।
আগামী বছর ফিদে দাবা বিশ্বকাপের সুযোগ
দাবা বিশ্বকাপ ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, এবং এই প্রতিযোগিতার টিকিটের জন্য লড়াই জমজমাট হতে যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন তারকা দাবাড়ু, যেমন মনন রেজা নীড়, আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমান, তাহসিন তাজওয়ার, আরও অনেকেই এই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেতে চান। তাদের প্রত্যাশা, যথাযথ নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ মিলবে।
বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের টিকিটের জন্য বাংলাদেশের দাবাড়ুদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা এবং কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ফেডারেশন তার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে চেষ্টা করছে, তবে দাবাড়ুদের মধ্যে দাবি উঠেছে যে, তাদের জন্য বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ উন্মুক্ত রাখতে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আগে আয়োজন করা উচিত। ফেডারেশন তার ভবিষ্যত পরিকল্পনায় এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেবে এবং সমান সুযোগের ভিত্তিতে খেলোয়াড় নির্বাচন করবে বলে আশা করা যায়।