July 8, 2025
মার্কিন অর্থনীতি যদি গতি হারায়, তাহলে তা হবে ট্রাম্পের কারণে: সিএনএন

মার্কিন অর্থনীতি যদি গতি হারায়, তাহলে তা হবে ট্রাম্পের কারণে: সিএনএন

জানু ২২, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার প্রথম দিনেই বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। যদিও তিনি অর্থনীতি নিয়ে বড় অঙ্গীকার করেছিলেন, সেগুলোর কোনোটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। তবে, প্রতিবেশী কানাডার রপ্তানি পণ্যে শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে তিনি আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সই করতে পারেন।

মার্কিন অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি:

মার্কিন অর্থনীতি এখন বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। বেকারত্বের হার মাত্র ৪ দশমিক ১ শতাংশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে খুবই নিম্নতম। তবে, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। যদিও মূল্যস্ফীতি বর্তমানে কিছুটা কমে এসেছে, তবুও মানুষ অসন্তুষ্ট এবং তা আবারও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে, মার্কিন শ্রমবাজার শক্তিশালী এবং মজুরি বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির তুলনায় বেশি হওয়ায় সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির হার আশাব্যঞ্জক।

ট্রাম্পের প্রথম দিনের নির্বাহী আদেশ:

ট্রাম্প তাঁর প্রথম দিনেই বিভিন্ন নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে জ্বালানি, সীমান্ত, অভিবাসন এবং কর সম্পর্কিত কিছু পদক্ষেপ। তিনি ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিদের জন্য কর অবকাশসুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং কর ও লাল ফিতার দৌরাত্ম্য হ্রাস করার অঙ্গীকার করেছেন। তবে, অর্থনীতি সম্পর্কিত কোনো বড় পদক্ষেপে তিনি এখনো সই করেননি।

অর্থনীতি এবং মূল্যস্ফীতি:

ট্রাম্প জানেন যে, মার্কিন জনগণের মূল অভিযোগ হলো উচ্চ পারিবারিক ব্যয়। মুডিস অ্যানালিটিকসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় বর্তমানে মার্কিন ভোক্তাদের একই পণ্য কিনতে ১ হাজার ২১৩ ডলার বেশি খরচ করতে হচ্ছে। তবে, আয় কিছুটা বেড়েছে, যার ফলে কিছু মানুষ বাড়তি ব্যয় মেটাতে পারছেন। তবুও, অনেকেই ব্যয়ের সঙ্গে খাপ খাইতে পারছেন না, এবং ট্রাম্প ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করার কথা বলেছেন।

শুল্ক বৃদ্ধি ও তার প্রভাব:

ট্রাম্প আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা শেষমেশ ক্রেতাদের ওপর চাপ তৈরি করবে এবং বাড়তি মূল্য তাদের ঘাড়েই পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প যেসব অঙ্গীকার করেছিলেন, যেমন কর হ্রাস এবং বাণিজ্য সংস্কার, সেগুলো বাস্তবায়িত হলে করপোরেট মুনাফা বাড়বে, তবে এটি মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি করতে পারে। এতে ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার বাড়াতে হতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টকর হতে পারে।

বিশ্লেষকের মতামত:

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে, এবং ফেডারেল রিজার্ভ মুদ্রানীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হতে পারে। তারা আরও উল্লেখ করেছেন যে, জিনিসপত্রের দাম প্রাক-মহামারি পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, এবং কেবল একটি বড় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমেই তা সম্ভব হতে পারে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার প্রথম দিনেই বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, তবে অর্থনীতি সম্পর্কিত বড় সিদ্ধান্তগুলো এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। মার্কিন অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছে, কিন্তু মূল্যস্ফীতির সমস্যা এবং শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন যদি হয়, তবে তা মার্কিন অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, এবং ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার বাড়াতে হতে পারে।

Leave a Reply