
এখনই নয়, ন্যূনতম সংস্কার করেই নির্বাচন চান মির্জা ফখরুল
জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, অবিলম্বে নির্বাচন নয়, বরং ন্যূনতম সংস্কারের পর নির্বাচনই দেশের সমস্যাগুলোর সমাধান আনতে পারে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ‘গ্রন্থ আড্ডা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।
নির্বাচন ও সংস্কারের প্রস্তাব
জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ আলোচনায় মির্জা ফখরুল বলেন,
“আমরা এখনই নির্বাচন চাইছি না। তবে, ন্যূনতম যে সংস্কার প্রয়োজন, তা করে নির্বাচন করলে দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হবে। নির্বাচিত সরকার সবসময়ই অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো।”
তিনি আরও জানান, সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি আশাবাদী।
নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজনীয়তা
মির্জা ফখরুল নির্বাচনকে জাতীয় সমস্যাগুলোর সমাধানের প্রধান উপায় হিসেবে তুলে ধরে বলেন,
“নির্বাচন হলে জনগণের ভাষা বোঝার মতো একটি নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেবে। একটি নির্বাচিত সরকার পিপলস ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করবে, যা বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।”
ধৈর্যের আহ্বান
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন,
“এই অবস্থার পরিবর্তন এক দিনে সম্ভব নয়। একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি করতে হবে। এজন্য ধৈর্য ধরতে হবে এবং কখনো আশা হারানো যাবে না।”
তিনি সরকারের ব্যর্থতা এবং দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন,
“আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি, কিন্তু ধৈর্য কম। সরকারের অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবে ভুল-ত্রুটি হচ্ছে। তাদের কাজের জন্য সময় দিতে হবে।”
বর্তমান আন্দোলন ও পরিবর্তনের সম্ভাবনা
মির্জা ফখরুল আরও উল্লেখ করেন,
“বর্তমানে বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে মানুষ আন্দোলনে নামছে। অতীতে এ ধরনের সাহস কেউ দেখাতে পারেনি। পরিবর্তনের যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
অনুষ্ঠানের অন্যান্য অংশগ্রহণকারী
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আবদুস সালাম এবং সঞ্চালনা করেন সাবেক ছাত্রনেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, বিএনপি আসন্ন নির্বাচনের আগে ন্যূনতম সংস্কারের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আগ্রহী। দলটি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনকেই সমাধানের মূল উপায় হিসেবে দেখছে।