
জিম্মিদের তালিকা না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর হবে না যুদ্ধবিরতি: নেতানিয়াহু
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সময় নির্ধারণ হলেও, জিম্মি তালিকা প্রকাশ নিয়ে হামাসের দেরির কারণে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার জানিয়েছেন, হামাস মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত পূর্বনির্ধারিত সময়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে না।
যুদ্ধবিরতির স্থগিত ঘোষণা
ইসরায়েলের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে নেতানিয়াহুর দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামাসের পক্ষ থেকে জিম্মিদের তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি স্থগিত থাকবে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, “হামাস প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তালিকা প্রকাশ না করলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা যাবে না।”
যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রধান শর্তাবলি
শুক্রবার ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভা চুক্তির অনুমোদন দেয়। এর প্রথম ধাপে:
- হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
- মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা অন্তর্ভুক্ত।
- ইসরায়েল পাল্টা হিসেবে কারাগারে আটক সমস্ত ফিলিস্তিনি নারী ও ১৯ বছরের কম বয়সী শিশুদের মুক্তি দেবে।
- বন্দিদের সংখ্যা ৯৯০ থেকে ১,৬৫০-এর মধ্যে হতে পারে।
গাজায় চলমান সহিংসতা ও প্রাণহানি
যুদ্ধবিরতির পূর্ব মুহূর্তেও ইসরায়েলের হামলায় গাজার মানবিক সংকট আরও প্রকট হয়েছে।
- গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
- ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে মোট নিহতের সংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজার।
- আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
- ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন।
মানবিক সংকট ও বাস্তুচ্যুতি
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে:
- ইসরায়েলি হামলায় অবরুদ্ধ গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
- উপত্যকার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত।
জিম্মি তালিকা প্রকাশে হামাসের দেরি এবং ইসরায়েলের শর্ত আরোপের ফলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া এখনো অনিশ্চিত। এর মধ্যে চলমান সংঘর্ষে গাজায় মানবিক বিপর্যয় তীব্রতর হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে শান্তির পথে অগ্রগতি সম্ভব হলেও বর্তমান পরিস্থিতি সংকটাপন্ন।