৬ থেকে ১১ জানুয়ারি ‘ঘোষণাপত্র সপ্তাহ’ উদ্যাপন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ‘ঘোষণাপত্র সপ্তাহ’ উদ্যাপনের ঘোষণা দিয়েছে। রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সরকারের প্রতি আহ্বান
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। তবে চার দিন পেরিয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে তাঁরা সমালোচনা করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “৩১ ডিসেম্বর আমরা সরকারকে সবার অংশগ্রহণের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। আমরা তৎপর হওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।”
‘ঘোষণাপত্র সপ্তাহ’ উদ্যাপনের কর্মসূচি
ঘোষণাপত্রের দাবিতে ৬ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে:
- লিফলেট বিতরণ: মানুষের কাছে ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব তুলে ধরতে লিফলেট বিতরণ।
- সমাবেশ ও জনসংযোগ: প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছাত্র-নাগরিক, পেশাজীবী, কৃষক, শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে গণসংযোগ।
- প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচারণা: শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘোষণাপত্রের ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আমরা আমাদের ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিফলেটের লিংক সরবরাহ করব। সেখান থেকে যেকেউ প্রিন্ট করে নিজেদের এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন। এই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
নেতারা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র বিষয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না দেখা গেলে, তারা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য একটি গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন। এটি সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে হতে পারে। তবে ২০২৪ সালে শহীদ ও আহতদের অধ্যায়কে স্বীকৃতি দিতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা সরকারের প্রতি দ্রুত ঘোষণাপত্র প্রকাশে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা বলেন, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি প্রস্তুত।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ। সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন এবং সহমুখপাত্র সালেহউদ্দিন সিফাত।