পর্ন তারকাকে ঘুষ: ট্রাম্পের সাজা হওয়া নিশ্চিত, তবে কারাদণ্ড না হওয়ার ইঙ্গিত
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ১০ জানুয়ারি এ মামলায় তাঁর দণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হবে। তবে তাঁকে কারাদণ্ড দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিচারক হুয়ান মারচ্যান।
আদালতের রায় ও বিচারকের বক্তব্য
মামলায় ট্রাম্পকে ‘শর্তহীন মুক্তি’ দণ্ডাদেশ দেওয়া হবে, যার অর্থ তাঁকে কোনো কারাগারে থাকতে হবে না, আর্থিক জরিমানা দিতে হবে না কিংবা প্রবেশনের আওতায়ও আসতে হবে না। বিচারক মারচ্যান বলেন, “এটাই হবে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।”
১০ জানুয়ারি দণ্ডাদেশ ঘোষণার সময় ট্রাম্পকে সশরীরে বা ভার্চ্যুয়ালি আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে। বিচারক আরও জানান, ট্রাম্প এ রায়ে আপিল করার সুযোগ পাবেন এবং তিনি আপিলের পরিকল্পনার বিষয়ে ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মামলার পটভূমি
স্টর্মি ড্যানিয়েলস অভিযোগ করেছিলেন, ২০০৬ সালে নেভাডার একটি হোটেলে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক হয়েছিল। এ ঘটনা গোপন রাখতে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী ২০১৬ সালে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দেন। ট্রাম্প সেই অর্থ প্রদান ও ঘটনাটি ব্যবসায়িক নথিতে গোপন রাখেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাঁর হোয়াইট হাউস অভিমুখী পদক্ষেপ থামানোর জন্য বাইডেন প্রশাসনের একটি ষড়যন্ত্র।
মামলার বিচার কার্যক্রম
ম্যানহাটানের ডিস্ট্রিক্ট আদালতে গত বছরের মে মাসে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এরপর দণ্ডাদেশ ঘোষণার তারিখ কয়েক দফা পিছিয়ে যায়। বিচারক মারচ্যান বলেন, ট্রাম্প নিজেই মামলার দণ্ডাদেশ ঘোষণা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ও বিবাদীপক্ষের যুক্তি
ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিভেন চেউং এক বিবৃতিতে বলেন, “এ মামলা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি অবিলম্বে খারিজ করা উচিত।”
ট্রাম্পের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, মামলাটি দীর্ঘায়িত হলে তা তাঁর প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করবে। তবে বিচারক এ যুক্তি নাকচ করে জানান, জুরির রায় পাশ কাটানো হলে আইনের শাসন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ঐতিহাসিক ঘটনা
এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিরল, কারণ এর আগে কোনো সাবেক বা ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হননি। ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ১০ দিন আগে ট্রাম্পকে আদালতে হাজির হতে হবে।
মামলাটি রাজনৈতিক এবং সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা এটিকে আইনের শাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দেখছেন।