January 10, 2025
সংবিধান বাতিল করলে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হবে: রুহুল কবির রিজভী

সংবিধান বাতিল করলে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হবে: রুহুল কবির রিজভী

ডিসে ৩০, ২০২৪

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশের সংবিধান বাতিল করা মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার চেতনার অস্বীকৃতি। সংবিধানের সংশোধন বা সংযোজন করা যেতে পারে, তবে বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত জাতির জন্য আত্মঘাতী হবে।

নীলফামারীতে জনসভা ও সংবিধান প্রসঙ্গ
আজ সোমবার বিকেলে নীলফামারী সদর উপজেলার রামগঞ্জের দুবাছুরি দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত জনসভায় রিজভী এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। এ জনসভা ছিল ২০১৪ সালে র‍্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর পরিবারের জন্য নতুন বাড়ি হস্তান্তরের অংশ। সভায় লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রিজভীর বক্তব্যের মূল পয়েন্টসমূহ:

  1. সংবিধান বাতিলের বিপক্ষে যুক্তি:
    রিজভী বলেন, সংবিধান একটি জাতির আত্মজীবনী। এটি সংশোধন বা সংযোজন করা যেতে পারে, কিন্তু বাতিল করা উচিত নয়। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সংশোধন করা হয়। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী বৈশিষ্ট্য বাদ দেওয়া যেতে পারে, তবে সংবিধান বাতিল মেনে নেওয়া যায় না।
  2. অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা:
    রিজভী উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সমর্থন দেওয়া হলেও অন্তর্বর্তী সরকার যদি জনগণের প্রত্যাশার বাইরে গিয়ে কাজ করে, তা দেশের মানুষ মেনে নেবে না।
  3. মূল্যস্ফীতি ও জনগণের হতাশা:
    বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, চাল, চিনি, আলুর দাম কমেনি। ভারত থেকে আলু আমদানি করেও সংকট কাটছে না। এ বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতা জনগণের হতাশা বাড়াচ্ছে।
  4. সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থার বিরোধিতা:
    রিজভী সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করে বলেন, এটি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের কৌশল। তিনি দাবি করেন, এমন কোনো নির্বাচনব্যবস্থা জনগণের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না।
  5. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি:
    দেশে চলমান অপরাধ ও সহিংসতার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন রিজভী। তিনি বলেন, আইজিপি ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি দিলেও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

তারেক রহমানের বক্তব্য:
ভিডিও কনফারেন্সে তারেক রহমান বলেন, “তারা অধম বলে আমরাও অধম হব না। আমাদের রাজনীতি আদর্শের ভিত্তিতে চলবে।”

জনসভার অন্যান্য আলোচ্য বিষয়:
সভায় বিএনপির বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় নেতা বক্তব্য দেন। তারা সরকারের দুর্নীতি, ব্যর্থতা এবং জনগণের স্বার্থবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।
বিএনপির এই জনসভা থেকে সংবিধান, অন্তর্বর্তী সরকার এবং জনগণের প্রত্যাশা নিয়ে দলটির অবস্থান আরও স্পষ্ট হলো। রিজভী ও অন্যান্য নেতার বক্তব্যে সংবিধান রক্ষার পাশাপাশি সরকারকে জনগণের স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।

Leave a Reply