সাড়ে ৯ কোটি ইউরো বাজেট সহায়তা দিচ্ছে ওপেক ফান্ড
অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৯ কোটি ৬১ লাখ ইউরো (প্রায় ১,২৬৮ কোটি টাকা) দিতে সম্মত হয়েছে ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)। এ জন্য সংস্থাটি একটি ঋণচুক্তির খসড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) পাঠিয়েছে। চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. রেজাউল বাসার সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজস্ব খাত সংস্কার ও অর্থনৈতিক শক্তিশালীকরণ
সভায় কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়, স্ট্রেনদেনিং ইকোনমিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড গভর্ন্যান্স প্রোগ্রামের আওতায় এ বাজেট সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ঋণের শর্ত অনুযায়ী, দেশের রাজস্ব খাত সংস্কারের জন্য একটি স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। বিশেষভাবে শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিট গড়ে তোলার পাশাপাশি শুল্ক-কর আদায়ে আইন-কানুন প্রতিপালনের বিষয়টি নিশ্চিত করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, ১৫ শতাংশ একক ভ্যাটহার বাস্তবায়ন এবং নতুন আয়কর আইন কার্যকর করার অগ্রগতি সম্পর্কেও জানতে চেয়েছে ওএফআইডি। পাশাপাশি, নন-এনবিআর রাজস্ব বাড়ানো এবং সরকারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
চুক্তি সংশোধনের প্রস্তাব
সভায় আলোচনা হয় যে, ওএফআইডির অনেক প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং কিছু প্রস্তাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এ লক্ষ্যে ঋণচুক্তির খসড়াটি সংশোধন করে ওএফআইডিতে পাঠানো হবে। সংশোধিত চুক্তি উভয় পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে।
বাজেট সহায়তা বাড়াতে সরকারের উদ্যোগ
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো এবং ডলারের সরবরাহ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাজেট সহায়তায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত কোনো বাজেট সহায়তা পাওয়া যায়নি। তবে শিগগিরই বিশ্বব্যাংক থেকে ৫০ কোটি ডলার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৬০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়ার আশা করছে সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি বৃদ্ধি
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলমান ঋণ কর্মসূচি ৪৭০ কোটি ডলার থেকে ৫৩০ কোটি ডলার পর্যন্ত বাড়াতে সম্মত হয়েছে। তবে এটি বেশ কঠিন শর্ত সাপেক্ষে দেওয়া হবে। অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গেও বাজেট সহায়তা বিষয়ে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। সরকার আশা করছে, চলতি অর্থবছর শেষ নাগাদ প্রায় ৪০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে।
এই ঋণ এবং সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে অর্থনীতি আরো স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।