১৪ দলের শরিকদের কার্যালয় খোলা, তবে মাঠে ফেরায় অনিশ্চয়তা
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোট বর্তমানে গভীর সংকটে পড়েছে। এই জোটের শরিক দলগুলো নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছে। স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর এসব দল রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে ব্যর্থ হয়েছে, আর শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার আতঙ্কে নেতা-কর্মীদের হতাশা বাড়ছে।
গ্রেপ্তার ও আত্মগোপনে শীর্ষ নেতারা
- রাশেদ খান মেনন (ওয়ার্কার্স পার্টি) ও হাসানুল হক ইনু (জাসদ) বর্তমানে কারাগারে।
- ফজলে হোসেন বাদশা, দিলীপ বড়ুয়া, নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীসহ অন্যান্য নেতারাও আত্মগোপনে বা নিষ্ক্রিয়।
- ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর কয়েকজন নেতা দেশ ছেড়েছেন, কেউ কেউ দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন।
দলীয় কার্যালয় খোলা, কিন্তু সক্রিয়তা নেই
- শরিক দলগুলোর বেশির ভাগ কার্যালয় খোলা থাকলেও নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি প্রায় নেই।
- শীর্ষ নেতারা অনুপস্থিত, মাঝারি পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সীমিত উপস্থিতি রাখছেন।
- কিছু দল প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কর্মকাণ্ড চালু রাখার চেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের ছায়ায় রাজনীতি
- ১৪–দলীয় জোটের শরিকরা আওয়ামী লীগের কৌশল মেনে নিজেদের স্বতন্ত্র অবস্থান হারিয়েছে।
- জোটের শরিক নেতারা মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
- বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর শরিকদেরও আওয়ামী লীগের মতোই জনগণের বিরাগভাজন হতে হয়েছে।
নির্বাচনী রাজনীতির ধ্বংস
- জোটের শরিকদের শীর্ষ নেতারা গত নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কাছে হেরে যান।
- শরিকদের রাজনীতি আওয়ামী লীগের মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে, যা তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।
শিক্ষাবিদ আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন:
- ১৪ দলের শরিকরা নিজেদের রাজনীতি ভুলে গিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি অনুসরণ করেছে।
- আওয়ামী লীগের পতনের পর তাদের একই ভাগ্য বরণ করতে হচ্ছে।
এক শরিক দলের মধ্যম সারির নেতা বলেন:
- ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরির সুযোগ ছিল, কিন্তু মন্ত্রী-সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে তা সম্ভব হয়নি।
১৪–দলীয় জোটের শরিক দলগুলো বর্তমানে নিস্তেজ ও নেতৃত্বশূন্য। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের স্বতন্ত্র অবস্থান গড়ে তোলার সুযোগ হারানোর ফলে ভবিষ্যতে এদের পুনরুজ্জীবন অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।