
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ অনুগত বাহিনীর হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪ সদস্য নিহত
সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে একটি অভিযান চালানোর সময় দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনীর গুপ্ত হামলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
ঘটনাবলি
সিরিয়ার নতুন বিদ্রোহী যোদ্ধাদের নেতৃত্বাধীন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভূমধ্যসাগরীয় বন্দর শহর তারতুসের কাছে এ হামলা চালানো হয়। বিদ্রোহীরা জানায়, রাজধানী দামেস্কের কাছে কুখ্যাত সাইদনায়া কারাগারের সঙ্গে জড়িত এক সাবেক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে নিরাপত্তা বাহিনী হামলার শিকার হয়।
হতাহতের তথ্য
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, সংঘর্ষে বিদ্রোহীদের তিন সদস্যও নিহত হয়েছেন। হামলার পরপরই নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করে।
হোমসে বিক্ষোভ ও কারফিউ
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, হোমস শহরে বিদ্রোহীদের আলাওয়াইট মাজারে হামলার একটি পুরোনো ভিডিও প্রকাশের পর অস্থিরতা শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হোমসে রাতভর কারফিউ জারি করা হয়।
- এসওএইচআর জানিয়েছে, হোমসে বিক্ষোভ চলাকালে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন।
- বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে তারতুস, লাতাকিয়া এবং আসাদের জন্মস্থান কারদাহায়ও।
বিদ্রোহীদের ক্ষমতা গ্রহণ
বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস-এর নেতৃত্বাধীন আক্রমণ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে শুরু হয়ে মাত্র ১২ দিনের মধ্যে রাজধানী দামেস্ক পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ আক্রমণের ফলে আসাদ পরিবারের ৫০ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
- বাশার আল-আসাদ ও তার পরিবার রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
- এইচটিএস ক্ষমতায় এসে সিরিয়ার ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এইচটিএস-এর আন্তর্জাতিক অবস্থান
যদিও এইচটিএস এখনো জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসী তালিকায় রয়েছে, তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত আহমেদ আল-শারারের মাথার দাম বাতিল করেছে।
তবে, সিরিয়ায় এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি রয়েছে।
সিরিয়ার পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ক্ষমতা গ্রহণের পর নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়া এবং আসাদপন্থীদের হামলা দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই পরিস্থিতিতে একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।