July 16, 2025
যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজনের প্রভাব পরিবারগুলোতেও

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজনের প্রভাব পরিবারগুলোতেও

ডিসে ২৫, ২০২৪

থ্যাংকস গিভিং ডে যুক্তরাষ্ট্রে বড়দিনের পর সবচেয়ে বড় উৎসব। তবে এ বছর এই উৎসবকে ছাপিয়ে গেছে রাজনৈতিক মতাদর্শগত বিভাজন। ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পারিবারিক বন্ধনে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ইরিনার অভিজ্ঞতা: পারিবারিক আয়োজনে বিতর্ক এড়ানোর চেষ্টা

নিউইয়র্কের বাসিন্দা ইরিনা এবারের থ্যাংকস গিভিং ডেতে স্বামীসহ পারিবারিক আয়োজনে স্বামীর ভাইকে আমন্ত্রণ জানাননি। কারণ, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন সমর্থক।
ইরিনা বলেন, “খাবার টেবিলে ট্রাম্পের বিজয় নিয়ে তার কথা বলা আমি সহ্য করতে পারব না।” বিতর্ক এড়ানোর জন্য তাঁরা কেবল ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও মাকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

মার্কিন পরিবারগুলোতে মতানৈক্যের ছাপ

বিভিন্ন পরিবারে দেখা গেছে, পারিবারিক আয়োজনে রাজনীতি বা ধর্ম নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ করার নিয়ম চালু করা হয়েছে।

  • পেনসিলভানিয়ার অ্যান:
    • তাঁর পরিবার ২০১৬ সাল থেকে আয়োজনে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা বন্ধ রেখেছে।
    • তবে এবারের থ্যাংকস গিভিং ডেতে এর ব্যত্যয় ঘটায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
    • অ্যানের বোন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং সবাইকে রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেন।
  • ক্যালিফোর্নিয়ার হেক্টর:
    • হেক্টর নিজে ট্রাম্প সমর্থক হলেও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মতাদর্শগত বিভাজন রয়েছে।
    • পরিবারের এক আত্মীয় ট্রাম্পের হত্যাচেষ্টার প্রসঙ্গে বলেন, “গুলিটা ঠিক জায়গায় আঘাত করা উচিত ছিল।” এতে হেক্টর ক্ষুব্ধ হন।
  • ম্যাসাচুসেটসের চেট:
    • চেট জানান, রাজনীতি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেও তিনি ভাইয়ের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে পারছেন না।

রাজনৈতিক মতাদর্শ ও বিভাজনের গভীরতা

  • নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের জরিপ (অক্টোবর ২০২৪):
    • ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের ২০% রিপাবলিকানদের শত্রু মনে করেন।
    • রিপাবলিকান সমর্থকদের ১৬% ডেমোক্র্যাটদের শত্রু ভাবেন।
  • ওহাইওর রিটা (৬৬):
    • তিনি জানান, ট্রাম্পের প্রথম নির্বাচনের আগে পরিবারের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
    • ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় এবং ২০২১ সালের ক্যাপিটল হিল হামলার পর পরিবারে বিভাজন আরও গভীর হয়।
    • এখন অনেক সদস্য একে অপরের সঙ্গে কথাও বলেন না।

উৎসবের আবহে বিভাজন মেরামতের চেষ্টা

রাজনৈতিক বিভাজনের এ প্রেক্ষাপটে অনেক পরিবার উৎসবের আয়োজনে মতবিরোধ দূর করার চেষ্টা করছে।

  • পরিবারগুলোতে সাধারণত “রাজনীতি ও ধর্ম নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ” নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে।
  • তবে রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্যের কারণে অনেক পরিবারে সম্পর্কের দূরত্ব মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

থ্যাংকস গিভিং ডে ও বড়দিনের মতো উৎসব রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। পরিবারগুলোর ঐক্য বজায় রাখা এবং রাজনৈতিক বিভেদ দূর করার জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহনশীলতার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়ে বেশি।

Leave a Reply