July 8, 2025
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় জাহাজের ৭ জনকে: র‍্যাব

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় জাহাজের ৭ জনকে: র‍্যাব

ডিসে ২৫, ২০২৪

চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে সারবহনকারী এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সংঘটিত ৭ জন খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে র‍্যাব। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা না পাওয়া এবং মাস্টারের দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে জাহাজকর্মী আকাশ মন্ডল ইরফান এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

নিহতদের পরিচয়

হত্যাকাণ্ডে নিহতরা হলেন:

  • মাস্টার গোলাম কিবরিয়া
  • গ্রিজার সজিবুল ইসলাম
  • লস্কর মাজেদুল ইসলাম
  • শেখ সবুজ
  • আমিনুর মুন্সী
  • ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন
  • বাবুর্চি রানা কাজী

আহত ব্যক্তি: সুকানি জুয়েল।

হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন

র‍্যাবের তথ্য অনুযায়ী, মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহার এবং ৮ মাস ধরে বেতন না দেওয়ার ক্ষোভ থেকে ইরফান এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।

  • ঘুমের ওষুধ ব্যবহার: পাবনার একটি বাজার থেকে ইরফান ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। খাবারের সঙ্গে তা মিশিয়ে জাহাজের সবাইকে অচেতন করেন।
  • হত্যার অস্ত্র: জাহাজে থাকা নিরাপত্তার জন্য সংরক্ষিত একটি চাইনিজ কুড়াল ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।
  • হত্যাকাণ্ড: অচেতন অবস্থায় সবার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ইরফান হাতে গ্লাভস পরে কুপিয়ে হত্যা করেন। প্রথমে মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়। অন্যরা বিষয়টি দেখে ফেলায় ইরফান সবাইকে হত্যা করেন।

ঘটনার সময় ও পালানোর কৌশল

হত্যাকাণ্ডের সময় জাহাজটি মাঝ নদীতে নোঙ্গর করা ছিল। সবার মৃত্যু নিশ্চিত করার পর ইরফান একটি ট্রলার নিয়ে হাইমচর এলাকায় এসে অন্য একটি ট্রলারের মাধ্যমে পালিয়ে যান।

ঘটনার প্রাথমিক প্রতিবেদন

  • জাহাজ মালিকের সন্দেহ: পণ্যবাহী জাহাজটি রোববার সকালে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দেয়। মালিক শিপন বাখেরা জাহাজে ফোন করে কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ করেন।
  • উদ্ধার কার্যক্রম: সোমবার হাইমচর উপজেলার ইশানবালা এলাকায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৫ জনের মরদেহ এবং ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে আহতদের মধ্যে ২ জন হাসপাতালে মারা যান।

মামলা ও তদন্ত

জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ অজ্ঞাতনামা “ডাকাত দলকে” আসামি করে হাইমচর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে র‍্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি ডাকাতির ঘটনা নয় বরং পরিকল্পিত ব্যক্তিগত প্রতিশোধ।

পটভূমি

মেঘনার বুকে রক্তাক্ত এই ঘটনা বাংলাদেশে নৌপথের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

Leave a Reply