জাহাজে ৭ খুন: জড়িতরা গ্রেপ্তার না হলে সারাদেশে নৌযানে কর্মবিরতি
চাঁদপুরের মেঘনা নদীর হাইমচর উপজেলার ইশানবালা এলাকায় সারবাহী জাহাজ এমভি আল-বাখেরায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের নৌপরিবহন খাতকে গভীরভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দাবি করেছে, ৩ দিনের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার না করা হলে সারা দেশে নৌযানে কর্মবিরতি পালন করা হবে।
লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সারা দেশের নৌ শ্রমিকরা শোক পালন করবেন এবং কালো বেজ ধারণ করবেন। এছাড়া, প্রতিটি জাহাজে ৩ দিন কালো পতাকা উত্তোলন করে শোক প্রকাশের পাশাপাশি সারা দেশের নৌ ও সমুদ্র বন্দরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
শ্রমিক ইউনিয়ন নিহত শ্রমিকদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন এবং প্রত্যেকের পরিবারকে সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
সোমবার বিকেল তিনটার দিকে কোস্ট গার্ড ও পুলিশ পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা তিনজনের মধ্যে দুজন হাসপাতালে মারা গেলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় সাতজনে। নিহতরা হলেন ফরিদপুর সদরের গোলাম কিবরিয়া (জাহাজের মাস্টার), তার ভাগ্নে সবুজ শেখ, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সালাউদ্দিন (ইঞ্জিনচালক), জাহাজের সুকানি আমিনুল মুন্সী, স্টাফ সজিবুল ইসলাম এবং নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লস্কর আমিনুল মুন্সী। এ নামগুলো অন্যান্য জাহাজের মাস্টার ও সুকানিদের শনাক্তকৃত।
এ ঘটনায় একমাত্র জীবিত থাকা সুকানি জুয়েল (২৮) ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। চাঁদপুর কোস্টগার্ড কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফজলুল হক জানান, জাহাজে খুন হওয়া পাঁচজনই তাঁদের নিজ কেবিনে নির্মমভাবে হত্যা হন।
এই ঘটনা বাংলাদেশের নৌপরিবহন নিরাপত্তার উপর প্রশ্ন তুলেছে। শ্রমিক সংগঠনের দাবি এবং কর্মসূচিগুলো দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের গুরুত্ব নির্দেশ করে। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপর জোরালো চাপ সৃষ্টি হয়েছে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার জন্য।