ক্যারিবীয় দ্বীপে মেহেদি হাসানের জাদুকরী পারফরম্যান্স
সেন্ট ভিনসেন্ট—ক্যারিবিয়ান সাগরের নীল জলরাশিঘেরা ছবির মতো সুন্দর এই দ্বীপ। সেই নয়নাভিরাম দ্বীপের আর্নস ভেলের ২২ গজে এবার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখালেন মেহেদি হাসান। ছয় বছর আগে জাতীয় দলে অভিষেকের সময় যে প্রত্যাশা ছিল, অবশেষে তা পূরণে সফল তিনি। ব্যাটিংয়ে পুরো সামর্থ্য দেখাতে না পারলেও অফস্পিনে বাজিমাত করেছেন। শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। তিন ম্যাচে ৮ উইকেট ও ৩৭ রানের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য সিরিজসেরা হয়েছেন তিনি।
অভিষেক থেকে সাফল্যের গল্প:
২০১৮ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফর্ম করার পুরস্কার হিসেবে মেহেদি হাসানের টি২০ অভিষেক হয়। নিখুঁত লাইন-লেন্থে বল করা, দুর্দান্ত ফিল্ডিং এবং মারকুটে ব্যাটিং—সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন টি২০ ক্রিকেটের আদর্শ প্যাকেজ। তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে সময় লেগেছে। এর মধ্যে ২০২২ সালে টি২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ না পেয়ে নির্বাচকদের সমালোচনা করে বোর্ডের রোষানলে পড়েন এবং দীর্ঘ সময় দলের বাইরে থাকতে হয়।
ফিরে আসার লড়াই:
গত ডিসেম্বর থেকে আবার টি২০ দলে নিয়মিত হতে শুরু করেন মেহেদি। তবে গত টি২০ বিশ্বকাপে বেশিরভাগ ম্যাচ ডাগআউটে কাটাতে হয় তাঁকে। বাংলাদেশ সেই টুর্নামেন্টে আর্নস ভেলেতে তিনটি ম্যাচ খেললেও একটি ম্যাচেও সুযোগ পাননি মেহেদি। সদ্য সমাপ্ত ক্যারিবীয় সিরিজে তাঁর পারফরম্যান্স দেখে হয়তো টিম ম্যানেজমেন্ট সেই সিদ্ধান্তে এখন আফসোস করছে।
বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং:
সিরিজের প্রতিটি ম্যাচে নতুন বলে বোলিং করে উইকেট এনে দিয়েছেন মেহেদি। তাঁর সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব নিকোলাস পুরানকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। তিন ম্যাচেই প্রায় শূন্য হাতে সাজঘরে ফিরিয়েছেন পুরানকে।
মেহেদি জানান, বিপিএল ও অন্যান্য আসরে এক দলে খেলায় পুরানের দুর্বলতা সম্পর্কে আগে থেকেই জানতেন। পুরান অফস্পিনের বিপক্ষে দুর্বল, সেই তথ্য কাজে লাগিয়ে বোলিং পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন তিনি। নিজের সাফল্যের পেছনে মেহেদি হাসান মিরাজের পরামর্শ ও সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেছেন।
অফস্পিনের কারিশমায় মেহেদি হাসান যেন নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর এই পারফরম্যান্স শুধু সিরিজ জয়েই অবদান রাখেনি, বরং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দলের জন্য আরও বড় প্রত্যাশা জাগিয়েছে।